ওয়েটিং রুম
প্রতিটি জীব দেহ আমাদের কোন ট্রেন স্টেশনের ওয়েটিং রুমের মত। যেমন, কোন এক লোক ট্রেন থেকে নামলো। আরেক ট্রেনে উঠবে ৩০মিনিট পর। এর মাঝখানে সে ওয়েটিং রুমে বসে অপেক্ষা করার জন্য বসলো। ওয়েটিংরুমে ঢুকেই তার চোখে পড়লো রুমের লাইটটি নষ্ট।
তাই সে একটি এনার্জি বালব কিনে তা লাগালো। তার পর খেয়াল করলো রুমে অনেক মাকড়সার জাল। তাই সে এক একটি ঝাড়ু কিনে রুমটি পরিষ্কার করলো। তারপর খেয়াল করলো রুমের ফ্লোরে ময়লা দাগ। তখন সে রুমটি জল দিয়ে ধুয়ে দিলো। তারপর সে খেয়াল করলো রুমের বসার চেয়ার গুলো বেশি একটা আনন্দদায়ক নয়। তাই সে একটি আরামদায়ক চেয়ার ও ফার্নিচার কিনলো।
এমনভাবে সে রুমটি সাজানোর জন্য আরও অনেক কিছু জিনিস কিনে রুমটি সাজালো। এরপর সে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেল এবং তার আরামদায়ক চেয়ারে বসতে যাচ্ছে ঠিক এই মুহুর্তে হটাৎ করেই ট্রেনের হর্ন শুনতে পেল এবং সে ট্রেনে উঠার জন্য ওয়য়েটিং রুমটি ছেড়ে চলে গেল এবং আগত ট্রেনে বসে তার পরবর্তী গন্তব্য স্থানে চলে গেল।
এই লোকটি আর কেও নয় আপনি, আমি ও সবাই। অবাক হলেও এটাই সত্য, আমরা পৃথিবীতে এসেছি চিৎজগতের এক মুহুর্তের চেয়ে অনেক কম সময়ের জন্য। আমাদের গন্তব্য অনন্তকোটি ব্রহ্মান্ডের শ্রেষ্ঠতম জংশন গোলক বৃন্দাবন। আর এই দুনিয়ার জীবন হচ্ছে ওয়েটিংরুম। আমরা এই জীবনকেই এমন ভাবে সাজাচ্ছি যে আমরা ভুলেই গেছি আমাদের মৃত্যু খুব সন্নিকটে এবং আমাদের এই সাজানো গোছানো জগৎ সবকিছু ছেড়ে মৃত্যু নামক ট্রেনে চড়ে চলে যেতে হবে।
আমরা এই ওয়েটিং রুম সাজিয়ে কি ভোগ করতে পারবো ? একবার কি আমাদের ভাবা উচিত নয় ? গন্তব্য কোথায় ? কি করছি এই ওয়েটিংরুমে? এবং কি করা উচিত ? আমরা কি আমাদের মূল গন্তব্যে গোলক বৃন্দাবনে যেতে পারব?
Comments