অশ্লীলতা, সমকামিতা, নগ্নতা ও যৌনতা
‘অশ্লীল’ ও `সমাকামিতা` শব্দটির মধ্যেই একটি অমোঘ আকর্ষণ আছে বৈকি- ‘অশ্লীল’ বলে প্রচার পাওয়া বইয়ের কাটতি বেশি, অশ্লীল সিনেমার বাড়তি দর্শক, অশ্লীল গানের শ্রোতার আধিক্য, অশ্লীল কৌতুকে বর্ধিত আনন্দযোগ! প্রেক্ষাগৃহগুলো ‘এক টিকিটে দুই সিনেমা’র রমরমা যুগ পেরিয়ে এসেছে- ক’দিন হলো! অশ্লীলতার গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ নগ্নতা আর নগ্নতার হাত ধরে হাজির হয় ‘কাম’ ও ‘যৌনতা’। অশ্লীলতা- একটি অমীমাংসিত বিতর্ক ; এটির অসংজ্ঞায়িত সংজ্ঞার মতোই। অশ্লীলতা’ বা Obscenity কে অধিকাংশে পর্নোগ্রাফির সাথে গুলিয়ে ফেলে। জেনে রাখা ভালো- পর্নোগ্রাফি মাত্রই অশ্লীল কিন্তু অশ্লীল মাত্রই পর্নোগ্রাফি নয়, পর্নোগ্রাফি একটি বেআইনি কারবার- ওদিকে সব অশ্লীলতাই আবার অবৈধ নয়। পর্নোগ্রাফিতে নগ্নতা ও যৌনতার যুগপৎ উপস্থিতি থাকলেও ‘নগ্নতা ও যৌনতা’র কিছু রূপ ‘অশ্লীলতা’ কিংবা ‘পর্নোগ্রাফি’র আওতার বাইরে রেখে এটিকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে যেমন- নগ্নতা ও যৌনতা কে উপজীব্য করে শিল্পীর আঁকা পেইন্টিং, ভাস্কর্য, ক্যামেরার ছবি, নাটক, সিনেমার বিশেষ দৃশ্য, গানের লিরিক্স আর সাহিত্য। শিল্প মাধ্যমে অশ্লীলতার এমন রূপের নাম- ‘ইরোটিকা’ (Erotica) । তাই সব নগ্নতা যৌনতা কিংবা অশ্লীলতার প্রকাশ নয়, বরং সৌন্দর্য, প্রেম ও বীরত্বের প্রকাশ।
ইরোটিক শিল্প- সাহিত্য-সিনেমা কিংবা শিল্প- সাহিত্য-সিনেমায় ‘ইরোটিকা’র ব্যবহারের ইতিহাস অতি পুরাতন এবং দুর্দান্ত প্রতাপে বর্তমান। নগ্নতা ও যৌনতা যেহেতু জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই শিল্প-সাহিত্যে এটি অবধারিতভাবে প্রতিফলিত হয়েছে সেই গ্রিক সভ্যতায় নগ্ন ভাস্কর্য নির্মাণের আমল থেকেই। সৌন্দর্যের দেবী ভেনাস কিংবা প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির মতো নগ্ন নারী ভাস্কর্য ছাড়াও গ্রিক ভাস্কর্যে ফুটে উঠেছে বীর গ্রিক যোদ্ধাদের নগ্ন রূপ। গ্রিকরা মনুষ্য দেহের সৌন্দর্যের নিরিখে সবকিছুর সৌন্দর্য মূল্যায়ন করত। মানুষ দেখতে কেমন তা নয়, বরং মানুষের দেখতে কেমন হওয়া উচিত- সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তার চিত্রায়ণ হওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করতো। প্রাচীন বাংলার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের দিকে তাকালেও ভাস্কর্যের এই নগ্নরূপ দেখা যায়। আমরা টিকিট কেটে টাকা খরচ করে মিউজিয়ামে ঢুকে মাটির তলা থেকে তুলে আনা নারী বিভঙ্গের এই নগ্ন ভাস্কর্য দেখি, মুগ্ধ হই কিন্তু কামার্ত হওয়ার প্রশ্ন তাতে উত্থিত হয়না- কারনটা স্পষ্ট- এই নগ্ন ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় ও দার্শনিক ধারণা বিকশিত হয়েছিল। ফরাসী শিল্পী রোঁদ্যার তৈরি দু’জন নগ্ন নর-নারীর গভীর আলিঙ্গনের প্রকাশ ‘The Kiss’ নামক বিখ্যাত ভাস্কর্যের শিল্প- সৌন্দর্যে শতাব্দী ধরে বুঁদ হয়ে আছে পৃথিবীর মানুষ। চিত্রকর্ম বা পেইন্টিং এ শিল্পীরা উদারভাবে তুলে এনেছেন বিবসনা নারীদের- নানা বিভঙ্গ, দেহবল্লরী ও বৈভবে। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, মাইকেল অ্যানজেলো’র চিত্রকর্মের ইরোটিক, উলঙ্গ নারীরা ঝুলে আছে পৃথিবীর দেয়ালে দেয়ালে। আবার ক্রুশবিদ্ধ যিশুর যতো পেইন্টিং ও ছবি আছে তাতে দেখা যায় নগ্ন যিশুকে। না, এটি যৌনতার বহিঃপ্রকাশ বিবেচিত হয় না। পেইন্টিং এ প্রকাশিত ‘উলঙ্গতা’ প্রসঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কেও আমরা পাই একেবারে নিঃসংকোচ। বিদেশের মিউজিয়ামে নগ্ন নারী চিত্র দেখে আপ্লুত রবীন্দ্রনাথ ১৮৯০ সালের ‘য়ুরোপ যাত্রীর ডায়েরী’ তে লিখেছেন- “সেদিন ফ্রেঞ্চ এক্জিবিশন-এ একজন বিখ্যাত আর্টিস্ট-রচিত একটি উলঙ্গ সুন্দরীর ছবি দেখলুম। কী আশ্চর্য সুন্দর! দেখে কিছুতেই তৃপ্তি হয় না। সুন্দর শরীরের চেয়ে সৌন্দর্য পৃথিবীতে কিছু নেই—কিন্তু আমরা ফুল দেখি, লতা দেখি, পাখি দেখি, আর পৃথিবীর সর্বপ্রধান সৌন্দর্য থেকে একেবারে বঞ্চিত। মর্ত্যের চরম সৌন্দর্যের উপর মানুষ স্বহস্তে একটা চির অন্তরাল টেনে দিয়েছে। কিন্তু সেই উলঙ্গ ছবি দেখে যার তিলমাত্র লজ্জা বোধ হয় আমি তাকে সহস্র ধিক্কার দিই। আমি তো সুতীব্র সৌন্দর্য-আনন্দে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলুম, আর ইচ্ছে করছিল আমার সকলকে নিয়ে দাঁড়িয়ে এই ছবি উপভোগ করি। বেলি যদি বড় হত তাকে পাশে নিয়ে দাঁড়িয়ে আমি এ ছবি দেখতে পারতুম। এ রকম উলঙ্গতা কী সুন্দর! “ নগ্ন স্তন বা নিদেনপক্ষে ক্লিভেজ কামোদ্দীপক অশ্লীল দৃশ্য হিসেবেই সাধারণত পরিগণিত হয়। ক্যামেরার জুমিং এর কেরামতিতে বাংলা সিনেমায় এটির সবচেয়ে উর্বর, অশ্লীল ও যৌন আবেদনময় ব্যবহার দেখা যায়। অথচ প্রসঙ্গের প্রয়োজনে অনাবৃত স্তন ও স্তন্যদানের দৃশ্যও হয়ে উঠতে পারে যৌনতাহীন, নিষ্পাপ, নিষ্কলুষ, শৈল্পিক। এটি পুরোপুরি দৃষ্টিভঙ্গি, প্রসঙ্গ, প্রয়োজন ও উপস্থাপনার ব্যাপার। শিশুকে স্তন পান করানোর যে দৃশ্য হামেশাই মানুষ প্রত্যক্ষ করে থাকে তার মধ্যে যৌনতা নেই, আছে মাতৃত্ব- সেটি বাস্তবের পৃথিবীতে হোক কিংবা সিনেমার দৃশ্যে- নায়িকা মৌসুমি অভিনীত ‘মাতৃত্ব’ (২০০৪) নামের ছবিতে মৌসুমি কর্তৃক শিশুকে স্তন্যদানের দৃশ্য তাই সহজাত, স্বাভাবিক ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে- এটি যৌনতা বা অশ্লীলতার প্রকাশ হয়নি। তারো বহু আগে ১৯৭৮ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত বিখ্যাত ছবি ‘সারেং বউ’ এর শেষ দৃশ্যে দেখা যায়- প্রলয়ংকরী জলোচ্ছ্বাসের পরে নায়ক ফারুক তৃষ্ণায় মরতে বসেছে। নায়িকা কবরী তৃষ্ণার্ত স্বামীকে পানি খাওয়ানোর নানান চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় চারদিকের নোনা পানির কারনে। প্রিয়তমের জীবন রক্ষার আর কোন উপায় না দেখে মাতৃত্বকে জাগিয়ে স্বামীকে দুধের শিশুর মতো বুকে জড়িয়ে নিজ স্তন পান করায় কবরী। স্বামী কদম (ফারুক) চোখ মেলে দেখে চমকে উঠে বলে- নবিতন, তুই আমারে পর কইরা দিলি! নবিতন (কবরী) বলে- না, জীবন বাঁচানো ফরজ।” – মানবিকতার কী অসাধারণ দৃশ্য! যদি এই দৃশ্য দেখে কারো মনে যৌনাকাঙক্ষা জাগে তাহলে পাপ সেই ব্যক্তির মনে, স্তন্যদানকারী নারীর চিত্রে নয়। অশ্লীল সাহিত্যের উপযোগিতা কিংবা সাহিত্যে অশ্লীলতার অনুপ্রেবেশ নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। সেই বিতর্কের বিষ জল গড়িয়েছে আদালত অব্দি, নির্বাসনে গিয়েছে অনেক সাহিত্যিক এমনকি মৃত্যু তাড়া করে ফিরেছে তাদের- কারুর গিয়েছে জীবনই! নোংরা চটি ও সাহিত্যে যৌনতার প্রকাশ- এই দুটো ব্যাপার যে আলাদা তা বুঝতে সময় লাগে, সমকাল কে অতিক্রম করতে হয়। সাহিত্যকে যদি জীবনের দর্পন মানি, যৌনতা যদি হয় মানুষের তীব্রতম অনুভূতি, তাহলে সেই দর্পনে নিজের ও অন্যের কাম-ঘামের ক্লেদাক্ত রূপটিও উঠে আসবে- এই সত্যটি হজম করতে সমাজ অনিচ্ছুক। কিন্তু প্রাচীন বাংলা সাহিত্য থেকে মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিক ও উত্তারাধুনিক বাংলা সাহিত্যে অশ্লীলতা বা যৌনতা প্রবল দাপটে স্থান করে নিয়েছে। শরীর, কাম, যৌনতা অনুষঙ্গ হয়ে তীব্রভাবে প্রতিফলিত হয়েছে সাহিত্যে, যুগে যুগে- “মানুষ যে সময়টুকু যাপন করে সেটি জীবন নয়, জীবন হল সেটুকুই যা মানুষ মনে রাখে” – গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের এই উক্তির কথা মাথায় রেখে বলা যায়- লেখকের মৃত্যু হলেও যৌনতা কে উপজীব্য করে রচিত সাহিত্য ঠিকই বেঁচে আছে, প্রবল বিক্রমে, তীব্র জনপ্রিয়তায়। মধ্যযুগে রচিত “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” এ রাধা- কৃষ্ণের প্রণয় কিংবা মধ্যযুগের শাহ মুহাম্মদ সগীরের লেখা “ইউসুফ- জুলেখা” এই প্রবণতার উন্মেষ মাত্র। যদিও অমিয়ভূষণ মজুমদার মত দিয়েছিলেন- ‘যৌনতা গাইনোকলজির বিষয়; লেখকের কারবার এটি নয়’- অথচ তিনি নিজেই এ থেকে বেরোতে পারেন নাই। সৈয়দ শামসুল হকের ‘খেলারাম খেলে যা’- বাংলা সাহিত্যের অস্বস্তিকর উপন্যাসের একটি, তীব্র বিতর্কিত, যৌনতার উন্মুক্ত ব্যবহার হয়েছে এখানে অথচ নিষিদ্ধ পাঠের মতো আজো তুমুল আকর্ষনীয় এর প্রতি পৃষ্ঠা, যৌনতাকে ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছে মানুষের অন্তর্গত ক্ষয়, ক্ষরণ ও বিষাদের দলিল। কিন্তু সাহিত্যে যৌনতার অভিযাত্রায় শামসুল হক কি একা, নিঃসঙ্গ শেরপা? মোটেই নয়, দেশে এবং বিদেশে- ডিএইচ লরেন্স, জেমস জয়েস, গুন্টার গ্রাস থেকে মিলান কুন্দেরা হয়ে পশ্চিম বঙ্গের বুদ্ধদেব বসু, সমরেশ কিংবা বাংলাদেশের হুমায়ূন আজাদ বা আল মাহমুদ সাহিত্যে যৌনতা ও শরীর কে আশ্রয় করেছেন- কী তীব্র সৌন্দর্য ও শিল্পে! বিতর্ক হয়েছে, সমালোচনা হয়েছে, নিষিদ্ধ হয়েছে, লেখক কে আইনের কাঠগড়ায় দাড়াতে হয়েছে কিন্তু তাতে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি; বানের জলের মতো হুহু করে বেড়েছে পাঠ ও পাঠক। আজ যে বইটি অশ্লীলতার দায়ে নিষিদ্ধ হয়, নিন্দিত হয়- কালের পরিক্রমায় সেটিই নন্দিত হয়, শিল্পোত্তীর্ণ হয়। ডি এইচ লরেন্স এর “The Lady Chatterly’s Lover” বইটি অশ্লীলতার দোষে নিষিদ্ধ হয়েছিল, কারণ সেখানে সঙ্গমের বর্ণনা তীব্রভাবে ছিল। কিন্তু পরে মানুষ বুঝতে পেরেছে যে, এই বিবরণ আসলেই পরিস্থিতি বিশ্লেষণের জন্য অপরিহার্য ছিল। সমরেশ বসুর ‘প্রজাপতি’ নিষিদ্ধ ছিল ১৮ বছর! হুমায়ূন আজাদের “নারী” নিষিদ্ধ হয়েছিল কয়েক বছরের জন্য। আদালতের আদেশে নিষেধাজ্ঞা রদ হলো এক সময়- উভয় ক্ষেত্রে। বুদ্ধদেব বসু ১৯৬৭ সালে টর্নেডোর মতো এসে তাঁর বিখ্যাত “রাত ভ’রে বৃষ্টি” উপন্যাসে নির্ভয়ে ঘোষণা দিলেন- “– ভালোবাসায় শরীরই আসল— আরম্ভ, শেষ, সব ঐ শরীর। ভালোবাসা জৈব, ভালোবাসা যৌন, শরীর না-থাকলে কিছুই থাকে না ভালোবাসার।” এই উপন্যাসের প্রথম বাক্যটিই আরম্ভ হয়েছে প্রথমবারের মতো বাংলা সাহিত্যের এক আশ্চর্য সাহসী, দুর্বিনীত, উত্তেজক ‘যৌন স্বীকারোক্তি’র মধ্য দিয়েঃ “– হয়ে গেছে, ওটা হয়ে গেছে, এখন আর কিছু বলার নেই। আমি, মালতী মুখোপাধ্যায়, একজনের স্ত্রী আর একজনের মা, আমি ওটা করেছি। জয়ন্তর সঙ্গে, জয়ন্ত আমাকে চেয়েছে, আমিও তাকে।” “রাত ভ’রে বৃষ্টি” নিষিদ্ধ হলো যথারীতি- অশ্লীলতার দায়। মামলা উঠলো আদালতে। নিম্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট উপন্যাসের পান্ডুলিপি পর্যন্ত ধ্বংসের আদেশ দিলেন। এক সময় এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলো, অশ্লীলতার দায় কী মোচন হলো? আজো এই উপন্যাস “বেস্ট সেলার” বইয়ের একটি।
কবিতায় যৌনতা ও শারীরবৃত্তের তীব্রতম প্রকাশের কৃতিত্ব আল মাহমুদের। ‘সোনালি কাবিন’ এ আমরা আল মাহমুদ কে পাই যৌনতায় খাপ খোলা তলোয়ারের মতো ধারালো- “তারপর তুলতে চাও কামের প্রসঙ্গ যদি নারী খেতের আড়ালে এসে নগ্ন করো যৌবন জরদ/ শস্যের সপক্ষে থেকে যতটুকু অনুরাগ পারি তারো বেশী ঢেলে দেবো আন্তরিক রতির দরদ” “নগ্নতা বা যৌনতা শিল্পের শ্রেষ্ঠ প্রকাশ’- কিনা এটির বিতর্ক অমীমাংসিত। তবে নগ্নতা মাত্রই অশ্লীলতা নয়, ‘অশ্লীলতা মানেই নৈতিকতার ধ্বস’- আইন দিয়ে জোর করে নিষিদ্ধ করা হোক- এই দাবির ভিত্তিও বড্ড নড়বড়ে। কোনটি শিল্প, কোনটি প্রয়োজন আর কোনটি নয়- সেটি স্পষ্ট হয় শিল্পীর বা ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য হতেঃ নগ্নতা বা যৌনতার ব্যবহার যদি হয় সৌন্দর্য বিনির্মাণে, নিরেট সত্য প্রকাশে- সেটি শিল্প। জ্ঞান তৈরির প্রয়োজনে যদি হয়- সেটি প্রাসঙ্গিক, নিরপরাধ। আর স্রেফ কামোদ্দীপনা জাগানোই যদি উদ্দেশ্য হয়- সেটি শিল্প নয়- অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি, বিকৃত, দণ্ডনীয়। এক্ষেত্রে শিল্পীর দায়িত্ববোধের পাশাপাশি পাঠক বা দর্শকের বুদ্ধিবৃত্তিক মান, বয়স ও মানসিক পরিপক্কতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিল্পোত্তীর্ণ চিত্র, ভাস্কর্য, সাহিত্য অথবা শিক্ষক কর্তৃক প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় ক্লাস-পাঠ দর্শক, পাঠক কিংবা শিক্ষার্থীর কাছে ‘অশ্লীল’ মনে হতে পারে যদি তাঁর মানসিক পরিপক্কতা অগভীর হয় অথবা তাঁর নিজস্ব মুল্যবোধ যদি সাংস্কৃতিকভাবে সাংঘর্ষিক হয়। যে কখনো ইংরেজি মুভি দেখেনি- ‘টাইটানিক’ সিনেমায় নায়ক জ্যাক কর্তৃক নায়িকা রোজ এর নগ্ন স্তনের পোর্ট্রেট আঁকার দৃশ্য তাঁর কাছে চরম অশ্লীল বিবেচিত হবেই। সুতরাং, সব কিছু সবার জন্য নয়। অশ্লীলতার ধারণা এভাবেই আপেক্ষিক। তথ্যসূত্র: গুগুল
Comments