আত্মহত্যা কেন? কি করা যায়?
- Just Another Bangladeshi
- Sep 24, 2017
- 3 min read
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর হিসেবে গত ৬ বছরে আত্মহত্যা হয়েছে ৫৯৭৬০টি
তার মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ৩৩৪৩২ জন
আর বিষপানে আত্মহত্যা করেছে ২৬৩৭৭ জন
প্রতি বছর গড়ে ১০০০০ মানুষ আত্মহত্যা করছে ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) রিপোর্ট করেছে যে, প্রতিবছর ১ মিলিয়নেরও বেশী লোক আত্মহত্যা করছে । এই আত্মহত্যার পরিমান যুদ্ধ ও হত্যা জনিত বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যার চাইতেও বেশী । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই উদ্বিগ্নতার নাম দিয়েছে – “সামাজিক স্বাস্থ্য সমস্যা” হিসেবে ।
এ ক্ষণস্থায়ী সমাজে আত্মহত্যা জাগতিক এবং আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের অসম অবস্থাকেই আলোড়িত করে । যখন মানুষ আধ্যাত্মিকভাবে জ্ঞানশূন্য হয় । তখন তারা জাগতিক উদ্দেশ্য নিয়েই জীবনধারন করে । আত্ম পরিচয় ও আত্মসন্মান জনিত কারণে তারা তখন আসে জাগতিক উদ্দেশ্য যেমন – সম্পদ, ইন্দ্রিয়সুখ, অধিকার এবং নিজেদের অবস্থান সনাক্তকরণ ও অর্জন হতে । জাগতিক অর্জন সম্পর্কে সফলতার এরুপ সংকীর্ণ মনমানসিকতাপূর্ণ সংজ্ঞা আত্মহত্যামূলক চিন্তার মূলেই নিহিত আছে ।
কেন?
কারন মানুষ হয় শীঘ্রই না হয় দেরীতে এরুপ একটি অবস্থার মুখোমুখি হয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জন করবে যেখানে তারা হয় অর্জন করতে গিয়ে ব্যর্থ হবে না হয়, ব্যর্থতার ভয়ে ভীত হবে, জীবনে কোন কিছু না পাওয়ার অভাব বা হারিয়ে ফেলার শূন্যতা তাঁকে গ্রাস করে। যার জন্য তারা কঠোর সংগ্রাম করছে এবং একই ভাবে যারা এসব বস্তু লাভ করেছে, তাদের রয়েছে সেগুলোকে হারিয়ে ফেলার ভয় । এমন অবস্থায় মানুষ এমন সত্ত্বাশূন্য এবং উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে যে, তারা জীবনের মূল্যই হারিয়ে ফেলে এবং কেবল মুক্তি পাবার জন্যই সে তার অস্তিত্বের বিলীন ঘটায় ।
উদাহরণ স্বরুপ একজন ছাত্রের যদি সর্বোচ্চ গ্রেড পাওয়াই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে সে শীর্ষ হতে পেরেই উচ্ছ্বাস বোধ করে । কিন্তু সে মর্মাহত হয়, যদি তা করতে সে ব্যর্থ হয় । যদি সে মনে করে থাকে যে, পরীক্ষার ফলাফলই জীবনের সব তাহলে সে তার ব্যর্থতার জন্য জীবনকে মর্যাদাহীন বলে ভাববে এবং জীবনকে শেষ করে দেয়ার সিদ্বান্ত নিবে । এমতাবস্থায় আধ্যাত্মিকতা কিভাবে সাহায্য করতে পারে ?

রহস্যময় ধর্মীয় গ্রন্থ হতে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অধ্যাত্ম অংশ ঈশ্বরের প্রিয় সন্তান হিসাবে আমাদেরকে আমাদের নিত্যপরিচয় সম্পর্কে বুঝিয়ে দিতে সাহায্য করে । পারমার্থিক কার্যসমূহ যেমন প্রার্থনা, ধ্যান এবং ভগবানের পবিত্র নাম উচ্চারণ আমাদের প্রতি ভগবানের অকৃত্রিম ভালোবাসা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে । আমাদের জীবন একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই – প্রষিত ও পরিচালিত হয় আমাদের সব সামর্থ্য এবং সম্পদ ঈশ্বরের সেবায় ব্যবহার করা, এভাবেই ঈশ্বরের প্রতি আমাদের সুপ্ত ভালোবাসা জাগ্রত করা এবং সকল জীবের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়া ।
আমরা এ বিশ্বাসে বলীয়ান হব যে, সর্বদাই আমাদের পাশে থাকবে ভগবান । বুদ্ধিমান সন্তান হিসেবে মায়ের ভালবাসাকে প্রত্যক্ষ করুন, কেবল তাঁর স্নেহের মধ্যে না, মনের মধ্যেও আধ্যাত্মিকতা, কেবল সফলতার সময়ে নয়, ব্যর্থতার সময়েও ঈশ্বরের ভালোবাসা বুঝতে আমাদের সাহায্য করে । আমরা জীবনকে যথার্থ পরিপ্রেক্ষিতেই দেখি হারানো সুখ পাওয়ার ১০০ মিটার দৌড়ে নয় বরং চিরবর্তমান সুখ পাবার ১০০ কিলোমিটারের পরীক্ষা । এমনকি রদবদলের মাঝেও, আমাদেরকে ইশারা করা সেই চিরশ্বাশ্বত সুখকে আমরা পথের মধ্যেও দেখতে পাই । আমাদের হৃদয় ও জীবনের মাঝে ভগবানের রক্ষনসুলভও নিশ্চয়তা সূচক উপস্থিতিতে, আমরা জীবনের উথান পতনের মধ্যেও দৃঢ়তার সাথে অগ্রসর হই ।
সমাজবিজ্ঞান গবেষনায় নিশ্চিত হয়েছে যে, রবি বা উমেশ এর মত যে শিক্ষাত্থী ভগবানের নিকট প্রার্থনা করে বা মন্দির দর্শন করে বা আধ্যাত্মিক বই পড়ে, সেই শিক্ষার্থী খুব কমই আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে এবং নিজের জীবন হতে যে যত বেশী আধ্যাত্মিকতার চর্চা সরিয়ে নিবে, তত বেশী সে হাতে বন্দুক বা গলায় দড়ি বা ঔষুধ সেবনের মাধ্যমে নিজের জীবনকে শেষ করে দেয়ার দিকে ধাবিত হবে ।
চলুন, আমরা নিজেদেরকে একাত্মা করি এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন করি এবং এভাবেই সাধারণ মানুষদেরকে সুষম, জ্ঞানময়, শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দময় জীবন পরিচালনায় সহায়তা করি ।
(বিঃদ্রঃ - নিচে ছবিতে আরাফাতশাওনের ছবি আর সুইসাইড করার আগে তাঁর লিখা ডায়েরী
আরাফাতশাওন, অন্য দশটা ছেলের মত সেও এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল । কিন্তু সে এ+পাইনি । এইবার কমার্স থেকে পরীক্ষা দিয়ে 4.83 পেয়েছিল। কিন্তু বাবা-মায়েরবকা সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করেছে।
আত্মহত্যার আগে এসমাজের মানুষগুলোকে ও রাজনীতি সম্পর্কে বিষোদগার করেগিয়েছে। এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সবশেষে তার কাছে কারাকারা টাকা পায় তারও একটি হিসাব দিয়ে গেছেন। চলুন দেখে নেই কি লিখেছিলেনতিনি তার সু্ইসাইড নোটে
Comments