আবরার হত্যা মামলার অন্যতম মূল হোতা ইফতি মোশারফ হোসেন সকালের বাবা স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন।
গত ৩০/০১/২০২০ তারিখে আবরার হত্যা মামলার শুনানির তারিখ ছিল। আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আসামীদের বাবা-মা পরিবার কে খুব অসহায় অবস্থায় দাড়ায়ে থাকতে দেখলাম। বেশিরভাগ এর ই ফিনান্সিয়াল অবস্থা খারাপ দেখে বুঝা গেল। কিন্তু এরপরও টাকা, সময়, শ্রম খরচ করে তারা উপস্থিত। সকালের বাবাও সেখানে ছিল। (আমি চিনি নাই তখন)। আজ শুনলাম রাতে তার বাবা স্ট্রোক করে মারা গিয়েছেন।
একটা বাবার পক্ষে খুবই খুশির সংবাদ তার ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে। কিন্তু চান্স পাওয়ার পর যদি খুনীর আসামী হয়ে কি জেলে থাকে সেই বাবার পক্ষে কিভাবে মেনে নেয়া পসিবল। সেই বাবার পক্ষে দফায় দফায় কোর্টে হাজির হয়ে ছেলের জন্য আইনী সাপোর্ট দেয়ার ধকল কাটয়ে উঠা সম্ভব হয় নি। সেই জন্যই হয়ত স্ট্রোক করেছেন।
সকালের একজন ছোট ভাই আছে৷ সাথে মা। সকাল তো নিজের জীবন নিজেই খেয়ে ফেলেছে সাথে বাবা তো গেলই, ছোট ভাই আর মা এর জীবন টা অলমোস্ট শেষ করে দিল৷
আমার বিশ্বাস আবরার মারা গিয়ে এখন খুবই ভাল আছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে মৃত্যু সবার ভাগ্যে জোটে না। আবরার মারা গিয়ে আবরার এর পরিবার অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, কিন্তু তার থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৫ জন আসামীর পরিবার৷ ২৫ জনের পরিবারে গড়ে ৫ জন করে ধরলেও ২৫*৫=১২৫ টা মানুষের কষ্ট। সময়, অর্থ, শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। ভিক্ষুকের মত আশা নিয়ে কোর্টে যাচ্ছে, উকিলের কাছে প্রতি তারিখে কমপক্ষে ২৫*৫= ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঢালতেছে।
মানুষ সবাই সেলফিশ হলেও নিজের স্বার্থ টা তো দেখে। নিজের ভাল-মন্দ বিচার করাটা তো উচিত। কিন্তু তোমরা যারা ভার্সিটিতে এসে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়, সামান্য একটা পদের আশায় অজান্তেই নিজের কত বড় ক্ষতি করে ফেল।
প্রকৃতি সব সময় সব কিছুই ব্যালেন্স করে। সেটা হোক আজ কিংবা কাল। শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের পাপের পাল্লা ভারী হয়ে গিয়েছিল তাই হয়ত আগে ভাগেই সেটার প্রকাশ পেল।
মেহেদী হাসান রাসেল বুয়েটের এক সময় প্রতাপশালী নেতা ছিল। রোহিংা দের জন্য ফান্ড কালেকশনের সময় তার কাছ থেকে পার্মিশন পাই নি। তাই তার হল থেকে টাকা তোলাও হয় নি। সেই নেতা জেলে এখন পচতেছে। সামনে পাইলে থুতু ছিটাবে এখন সবাই।
রাজনীতি করা অবশ্যই দোষের কিছু না। দল কৌশলগত কারণে অনেক কিছু সাপোর্ট করতেই পারে, বিরোধীতাও করতে পারে। দলের খাতিরে না হয় সেটাই মানলা। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে সত্যের পথে থাকলেই তো হয়। তাও না হয় না থাকলা কিন্তু পদের লোভে দুর্বলের উপর সুযোগ নেয়ার কি দরকার। আজ তোমার ক্ষমতা আছে, কিন্তু কাল??
ভার্সিটিতে রাজনীতি করলে বড় ভাই হওয়া যায়, হয়ত কিছুদিন খুব ভাবে, প্রভাবে থাকা যায়। এই ভুল টাই অনেকে করে। সেই ভাব,প্রভাব, প্রতিপত্তির জন্য অনেকেই জয়েন করে, ছোটগুলার উপর অত্যাচার করে। কিন্তু অনেকে বুঝে না সেই ভাইদের মধ্যে ১০০০ জনের মধ্য থেকে ১ জন এমপি হবে, হয়ত ১০-২০ জন ভাল জায়গায় যাবে। অনেকের অনেক টাকাও থাকবে। কিন্তু আল্টিমেটলি তারা লাইফে সুখী হবে না। কারণ ওইযে প্রকৃতির প্রতিশোধ।
আর যে বড় ভাই এর নির্দেশে পদের আশায় এসব করবা একবার ধরা খাইলে বড় ভাইও পল্টি নিবে৷ আবরার এর মার্ডার কেসের আসামীদের যারা দানব বানিয়েছিল, বুয়েটে মারামারির সংষ্কৃতি চালু করেছে তাদের কিন্তু কিছু হয় নি। তারা বহাল তবিয়াতেই আছে। ক্ষতি যা হবার হল অপেক্ষাকৃত চুনো পুটিদের।
তোমরা যারা এখনো ভার্সিটিতে আসো নাই/কিংবা এসেছো একটু বিচার বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে জীবন যাপন কর/করবে। আজ ক্ষমতা আছে, অন্যের উপর সুযোগ নিবা কাল প্রকৃতি তোমার উপর সুযোগ নিয়ে ব্যালেন্স করবে৷ এইটাই নিয়তি। সো সাবধান।
নিজের জন্য না হলেও নিজের পরিবারের আপনজনদের দিকে চেয়ে হলেও ঠিক থাকো। তোমার কিছু হলে তুমি তো যাবাই, সাথে পরিবারও ধ্বংস হয়ে যাবে।
আবরার হত্যা একটা উদাহরণ হয়ে থাকল।
যথার্থ লিখেছেন।পোস্টটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টটি করার জন্য…
এই পোস্টটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে
এতো ভালো ভালো স্টুডেন্টরা যদি রাজনীতির পেছনে দৌড়ায় তাহলে কিভাবে হবে দেশ হারাচ্ছে সম্পদ প্রথম পরিবার হারাচ্ছে সন্তান
অনেক দুঃখজনক ঘটনা।প্রত্যেক ক্রেতাদের জীবন সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া উচিত এবং প্রত্যেকটা পদক্ষেপে ভাবা উচিত যে পরিণাম কি হতে পারে।