আমার জীবনের গল্পঃ ২য় পর্ব
আগেই বলেছি আমার বয়স তখন ৬/৭ মাস, আমার গালে আংগুলের দাগ দেখে আম্মু ভয় পেয়ে গেলো। আব্বু বাসায় ফেরার পর তাকে বিস্তারিত সব বলা হলো। এরপর আব্বু আমাদের মসজিদের হুজুর কে আনতে গেলো, হুজুর সব শুনে আব্বুর সাথে আসলো কিন্তু সমস্যা হলো বাসার গেটে এসে হুজুর বললো রুমে ঢুকবে না। এদিকে ৭ঃ৩০ টা বেজে গেছে এশার সময় হয়ে আসছে। আব্বু হুজুরকে বললো বাচ্চাটা কষ্ট পাচ্ছে আপনি না দেখলে সমস্যা হয়ে যাবে। হুজুর বললো- দেখেন আপনার বাসায় আমি অনেক গুলো জ্বীনের আনাগোনা পাচ্ছি। ১/২ জন না, অনেক জন আছেন..!!! এই অবস্থায় আমি বাসায় ঢুকলে উনারা ক্ষেপে যেতে পারেন, আর আমি অত বড় আলেম নই যে একাই সবার সাথে কথা বলতে পারবো। আব্বু নিরুপায় হয়ে হুজুরকে জিজ্ঞেস করলো এখন তাহলে কি করবো..!?! হুজুর কিছু আমল শিখিয়ে দিয়ে গেলেন আর বল্লেন প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান থেকে একজন অনেক বড় আলেম আসেন ঢাকায়, উনার সাথে কথা বললে হয়তো কোন উপায় বের হতে পারে কিন্তু উনার সাথে দেখা করাটা সমস্যা, উনি অনেক ওয়াজ করেন তাই সময় পাননা। উনি চেষ্টা করবেন কথা বলিয়ে দেয়ার জন্য। এরপর হুজুর চলে গেলেন। ডিসেম্বর আসতে আরও ৫/৬ মাস বাকি।
আমার নানা আমাদের এলাকার (ঢাকা) মোড়ল। উনি ওয়াজ মাহফিল বা এলাকার যত সমস্যা সব তদারকি করেন। আম্মু নানাকে সব খুলে বল্লেন। নানা আপাতত ভালো একজন আলেম থেকে আমার জন্য তাবিজ ব্যবস্থা করে দিলেন। এরপরও প্রতিদিনই আমার সাথে কিছু না কিছু ঘটতে থাকলো, সব চেয়ে কমন যেটা সেটা হচ্ছে, আমি খাটের নিচে শেষ মাথায় ওয়ালের সাথে উপুড় হয়ে শুয়ে একা একা খেলি, মাঝে মাঝে কান্না করি, হাসি, আর প্রায় সপ্তাহে ১/২ দিন আমার শরীরে অথবা গালে থাপ্পড়ের দাগ পাওয়া যায়। মা অই সময় অনেক ভেংগে পরেছিলেন। এর মধ্যে আরো অনেক দূর্ঘটনা ঘটেছে আমার ফ্যামিলি তে।একদিন আম্মুর শাড়ির আচলে আগুন লেগে গেলো, আরেকদিন আমি আব্বুর কি এক ঔষধ খেয়ে ফেল্লাম আমার অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেলো, আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। আমার মা, নানা, বাবা সবাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে গেলো আমার পাকস্থলী ওয়াস করাতে হলো। সেই যাত্রায় তো বেচে গেলাম। মা অনেক কান্নাকাটি করলেন। এখানে বলে রাখি আমার বাবা মা ২ জনই ধার্মিক সবসময় নামাজ কালাম নিয়ে থাকেন। আমি আমার নানার বাড়ির সবার বড় নাতি তাই আদর টাও অনেক বেশি, সবাই খুব চিন্তিত হয়ে গেলো। এখন ডিসেম্বর পর্যন্ত আমার সেফ রাখাটাই এক্টা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেলো। মাঝে মাঝেই রাতে জানালার কপাটে কেউ খুব জোরে ধাক্কা দেয়। অনেক রাতে আমার নাম ধরে ডাকে - " সৈকত", "সৈকত"...!!!! বাবা একদিন রেগে দরজা খুলে বের হতে গেলো, এরপর।

Comments