top of page
Writer's pictureJust Another Bangladeshi

ইসলাম ধর্ম কি নারীদের জন্য?

ইসলাম ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ হচ্ছে কোরান। এই গ্রন্থই একজন মুসলমান নারী বা পুরুষের প্রধান পথ প্রদর্শক। এই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ প্রথম থেকে শেয পর্যন্ত পড়লে সহজেই বুঝা যাবে যে কোরান শুধু পুরুষদের উদ্দেশ্যেই পাঠানো হয়েছে। নারীদের জন্য কোরান পাঠানো হয় নাই। নারীদের কোরান পড়ার প্রয়োজন নেই, শুধু মুমিন পুরুষরা নারীদের যা করতে বলবে তাই নারীদের করতে হবে, তাই নারীদের ধর্ম। আল্লাহ মনে করেছেন নারীরা কোরান পড়তে পারবে না অথবা নারীদের কোরান পড়ার প্রয়োজন নেই।


যেমন – সূরা নং ২ আল বাকারা (বকনা বাছুর) ২৫ নং আয়াত: “যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তুমি তাদেরকে সুসংবাদ দাও যে,তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। যখনই তাদেরকে জান্নাত থেকে কোন ফল খেতে দেয়া হবে, তারা বলবে, এটাইতো পূর্বে আমাদের খেতে দেয়া হয়েছিল। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করে এবং তাদের জন্য তাতে থাকবে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে হবে স্থায়ী।”

উপরের আয়াতটি আমরা একটু ভালো করে পড়ি। এখানে হযরত মুহম্মদ (স:) কে বলা হয়েছ তাদের সুসংবাদ দিতে যারা ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে তারা পরকালে জান্নাত, সুস্বাদু ফল আর পবিত্র স্ত্রীগণ পাবে।

স্ত্রী কাদের থাকে? পুরুষদের। তাহলে ঈমান কারা আনবে? পুরুষরা। কারা নেক কাজ করবে? পুরুষরা।

অতএব নারীদের ঈমান আনার দরকার আছে কি? নারীদের নেক কাজ করার দরকার আছে কি? যদি নারী পুরুষ সবার কথা বুঝাতো তাহলে লেখা হত, তাদের জন্য তাতে থাকবে পবিত্র স্বামী ও স্ত্রীগণ।

সূরা ৩ আল ইমরান (ইমরানের পরিবার) আয়াত নং ১৪: “মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে প্রবৃত্তির ভালো বাসা- নারী, সন্তানাদি, রাশি রাশি সোনা-রূপা, চিহ্নিত ঘোড়া, গবাদিপশু ও শস্যক্ষেত্র। এগুলো দুনিয়ার জীবনের ভোগ সামগ্রী। আর আল্লাহ, তার নিকট রয়েছে উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।”

উপরের আয়াতটিতে আল্লাহ মানুষকে বলছেন, মানুষের জন্য কী কী সুশোভিত মানে সুন্দর করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী একটি। কী চমৎকার। আর মানুষ বলতে শুধু পুরুষদের বোঝানো হয়েছে। কারণ নারীকেতো আর নারীদের জন্য সুন্দর করা হবেনা এবং নারীকে ঘোড়া, গবাদিপশু কাতারে নিয়ে গিয়েছে। আর নারীর কি প্রবৃত্তির ভালোবাসা নেই?

যদি নারীদের জন্যও কোরান লেখা হত তবে আয়াতটি হত এমন, “মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে প্রবৃত্তির ভালোবাসা নারী পুরুষ, সন্তানাদি,রাশি রাশি সোনারূপা, চিহ্নিত ঘোড়া,গবাদিপশু ও শস্যক্ষেত্র। “অর্থাৎ নারীর সাথে পুরুষ শব্দটিও থাকতো।

সূরা ৩ আল ইমরান আয়াত নং ১৫: “বল,আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম বস্তুর সংবাদ দেব? যারা তাকওয়া অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহর সমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি।”

এই আয়াতটিও ২নং সূরা বাকারার ২৫ নং আয়াতের মত। তোমাদেরকে বলতে মুমিন পুরুষদের বুঝানো হয়েছে। কারণ “পবিত্র স্ত্রীগণ।” তাই তাকওয়া শুধু পুরুষরাই অর্জন করবে নারীরা করবে না।

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ৩: “আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভালো লাগে; দুটি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে। এটা অধিকতর নিকটবর্তী যে, তোমরা জুলুম করবে না।”

এখানেও “তোমরা” পুরুষদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। ইয়াতীম কি শুধু মেয়েরাই ছিল? ছেলেরা কি এয়াতিম ছিল না? ইয়াতীম মেয়েদের ইনসাফ করতে হলে তাদের বিয়ে করতে হবে? বিয়ে না করে ইয়াতীম মেয়েদের কি ইনসাফ দেয়া যেতো না? আরো বলা হয়েছে, নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে। দুটি, তিনটি, চারটি। মানে নারী একেবারে দোকানের পণ্য। আবার যদি সমান আচরণ করতে না পারে তবে একজনকে অথবা বিয়ে না করলে ক্রীত দাসী বা যুদ্ধবন্দিনীকে ব্যবহার করা যাবে। একজন মা ই তার সন্তানদের প্রতি সমান আচরণ করতে পারে না। সেখানে বউদের সাথে সমান আচরণ আশা করা যায় কি? আল্লাহও তো বলেছেন যে সমান আচরণ করা সম্ভব নয়!

সূরা ৪ নিসা আয়াত ১২৯: “তোমরা কখনও স্ত্রীগণের মধ্যে সুবিচার করতে পারবেনা যদিও তোমরা তা কামনা কর, সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে ঝুকে পড়োনা ও অপরজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখোনা এবং যদি তোমরা পরস্পর সমঝতায় আসো ও সংযমী হও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।”

ক্রীতদাসী বা যুদ্ধবন্দিনীর সাথে বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক- কী ভয়ঙ্কর কথা! আল্লাহর এমন অমানবিক, অপমানকর, অসৌজন্যমূলক নিয়ম নারীদের জন্য! মনে হচ্ছে কি এটা আল্লাহ তথা সৃষ্টিকর্তার বিধান? প্রত্যেকটি সৃষ্টিই সৃষ্টিকর্তার কাছে সমান আদরের, সমান প্রিয় হওয়ার কথা। এতো দেখি পক্ষপাতিত্ব। এখন কি মনে হচ্ছে নারীদের জন্য ধর্ম আছে?

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ৪: “আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্ট চিত্তে মোহর দাও, অত:পর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তি সহকারে খাও।”

এখনেও ‘তোমরা’ বলতে মুমিনদের তথা পুরুষদের বুঝিয়েছে। যদি নারীপুরুষ সবার জন্য কোরান নাযিল হত তাহলে আয়াতটি এমন হত, “স্বামীরা স্ত্রীদের মোহর দিবে, স্ত্রীরা চাইলে ছাড় দিতে পারে, পরস্পর আনন্দে একসাথে বসবাস করার জন্য।”

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ১৫: “আর তোমাদের নারীদের মধ্য থেকে যারা ব্যভিচার করে, তোমরা তাদের উপর তোমাদের মধ্য থেকে চারজন সাক্ষী উপস্থিত কর। অত:পর তারা যদি সাক্ষ্য দেয় তবে তোমরা তাদেরকে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ রাখ যতক্ষণ না মৃত্যু তাদের জীবন শেষ করে দেয়। অথবা আল্লাহ তাদের জন্য কোন পথ তৈরি করে দেন।”

এখানে লক্ষ করুন ‘তোমাদের নারীদের’। এখানেও তোমাদের বলতে মুমিন পুরুষদের বুঝিয়েছে। আর সেই পুরুষদের নারী। নারী কোন স্বাধীন সত্বা নয়। ব্যভিচার কি শুধু নারীরা করে? ব্যভিচার করতে একজন নারী এবং একজন পুরুষের দরকার হয়। যদি নারী পুরুষ সবার জন্য কোরান নাযিল হত তা হলে আয়াতটি হত নিম্নরূপ – আর যদি কোন নারী ও পুরুষ ব্যভিচার করে তাদের জন্য সাক্ষী ও প্রমাণের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি সাক্ষ্য প্রমাণে সন্দেহাতীতভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তবে তাদের উভয়কে ঘরের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে হবে যতক্ষণ না মৃত্যু তাদের জীবন শেষ করে দেয়। অথবা এমনও বলা যেত, “তোমাদের নারীপুরুষের মধ্য থেকে”। কিন্তু তা বলা হয়নি।

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং১৯: “হে মুমিন গণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিছ হবে। আর তোমারা তদের আবদ্ধ করে রেখো না, তাদের যা দিয়েছ তা থেকে তোমরা কিছু নিয়ে নেয়ার জন্য, তবে যদি তারা অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদের অপছন্দ কর, তবে এমন হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছু অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যান রাখবেন।”

এখানেও হে মুমিনগণ মানে পুরুষদেরকে বলা হচ্ছে। নারীদের সাথে কি করতে হবে তার কথা বলা হচ্ছে। তবে এই অধম নারীজাতির উপর আল্লাহর অনেক দয়া প্রকাশ পেয়েছে এই আয়াতে।

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ২০: “আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রীকে বদলাতে চাও আর তাদের কাউকে তোমরা প্রদান করেছ প্রচুর সম্পদ, তবে তোমরা তা থেকে কিছু নিও না। তোমরা কি তা নেবে অপবাদ এবং প্রকাশ্য গুনাহের মাধ্যমে।”

উক্ত আয়াতের নায়কও সম্মানিত পুরুষগণ এবং পুরুষদের উদ্দেশ্যেই আর স্ত্রী হলো পণ্য। পছন্দ হল না সাথে সাথে বদলে ফেলা যাবে। তবে এত টুকু দয়া মহান আল্লাহতালা করেছেন তাদেরকে দেয়া জিনিস রাখা যাবে না। যদি নারীদের আল্লাহ, কোরাণ আর ধর্ম থাকতো তবে আয়াতটা হত এমন-

আর যদি স্বামীস্ত্রী পরস্পর পরস্পকে বদলাতে চায় বা তারা বিচ্ছেদ চায় তবে দাবীহীন শান্তিপূর্ণ ভাবে একে অপরকে ছেড়ে দিতে পারে। এতেই রয়েছে অসীম কল্যাণ।

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ২২: “আর তোমরা বিবাহ করো না নারীদের মধ্য থেকে যাদেরকে বিবাহ করেছে তোমাদের পিতৃপুরুষগণ। তবে যা পুর্বে সংঘটিত হয়েছে (তা ক্ষমা করা হল)। নিশ্চয় তা হল অশ্লীলতা ও ঘৃণিত বিষয় এবং নিকৃষ্ট পথ।”

এখানেও পুরুষদের উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে। যদি নারীপুরুষ সবার জন্য হত তবে আয়াতটা এমন হতে পারতো- মাতাপিতা, পিতামহপিতামহী, মাতামহমাতামহী যাদের বিবাহ করেছে তাদের বিবাহ করা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হল।

এভাবেই পরমদয়ালু আল্লাহতালা ২৩, ২৪ ও ২৫ নং আয়াতেও বীরপুরুষদের উদ্দেশ্যে ইনিয়ে বিনিয়ে বলেছেন, তাদের বিয়ে করার জন্য কাদের হালাল করা হয়েছে আর কাদের হারাম করা হয়েছে।

সূরা ৪ নিসা (নারী) আয়াত নং ৩৪: “পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হেফাযতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযত করেছেন। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তদের সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদের ত্যাগ কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। এরপর যদি তারা আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করনা। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান।”

উক্ত আয়াতে নারীদের যে কি পরিমান ছোট করা হয়েছে তা বাদ দেওয়া যাক। একজন মদখোর, লুলা ল্যাংড়া, কানা, বোবা, পাগল পুরুষলোকও নারীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ আশীর্বাদে ধন্য পুরুষকুল! অনেক মুসলিম নারী এটা সানন্দে মেনে নেন। কিন্তু কোরান যে শুধু এবং শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য তা উক্ত আয়াতেও বুঝা যায়। “আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর।” তোমরাই হল মহান পুরুষজাতি আর যাদের হল স্ত্রীগণ। আল্লাহতালা কোরান অবতীর্ণ করেছেন পুরুষজাতির উপর, পুরুষজাতির মঙ্গলের জন্য। নারীদের জন্য নয়। আল্লাহ আর পুরুষরা হল নিকট আত্মীয় আর নারীরা হল থার্ড পারসন।

সূরা নং ২ আল বাকারা (বকনা বাছুর) আয়াত নং ১৮৭: “সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জম্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজেদের সাথে খেয়ানত করেছিলে। অত:পর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদের ক্ষমা করেছেন। এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অত:পর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ রত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমা রেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তার আয়াত সমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন।”

উক্ত আয়াত পড়ে কি মনে হয়? নারীদের জন্য সিয়াম আছে? নারীদের জন্য যদি সিয়াম মানে রোজা ফরজ হত তা হলে আয়াতটা এমন হত-

সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য সহবাস হালাল করা হল। অতএব তোমরা স্বামীস্ত্রী সহবাস কর, পবিত্র হও আর আহার করে সিয়াম পালন কর। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম।

এখানে অবশ্য আরেকটা বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে। আল্লাহ সিয়ামের সময় স্ত্রীগমন হারাম করে ছিলেন। কিন্তু আল্লাহর প্রিয় মুমিনগণ রাতের অন্ধকারে স্ত্রীদের পেয়ে কাজ করে ফেললেন। এখন আল্লাহ আর কী করবেন? মাফ করে এটা হালাল করা ছাড়া তার আর গতি নাই। আল্লাহ কি পুরুষ? না হলে তাদের দুঃখকষ্ট এত তাড়াতাড়ি বুঝে কি করে? অথবা তার অস্তিত্বের জন্য পুরুষ দরকার। ওহ আরো লক্ষ করুন যখন ওইটা দরকার তখন তোমরা তাদের পরিচ্চদ আর তারা তোমাদের পরিচ্ছদ। আর অন্য সময় তালাক দাও, ঐ কর, সেই কর।

সূরা ২ আল বাকারা (বকনা বাছুর) আয়াত নং ২২১: “আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে কর না, যতক্ষণ তারা ঈমান আনে এবং মুমিন দাসী মুশরিক নারীর চেয়ে নিশ্চয় উত্তম, যদিও সে তোমাদের মুগ্ধ করে। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদের মুগ্ধ করে। তারা তোমাদেরকে আগুনের দিকে আহবান করে, আর আল্লাহ তার অনুমতিতে তোমাদেরকে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন এবং মানুষের জন্য তার আয়াত সমূহ স্পষ্ট রূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।”

এই আয়াতটিতে দেখা যাচ্ছে, তোমরা মানে পুরুষশার্দূলগণ। কারণ, ‘তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না’ এবং ‘মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিও না।’ তারা বিয়ে করবে না এবং তারাই বিয়ে দিবে না। বুঝালাম না আল্লাহতালা নারীদের ভাসুর মনে করে কিনা। সরাসরি না বলে আরেক জনকে দিয়ে বলায় বা করায়। যদি নারীপুরুষ সবার জন্য কোরান নাযিল করা হত তাহলে আয়াতটা এভাবে লেখা যেত- “আর তোমরা মুশরিক নরনারীদের বিয়ে করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। মুসলিম দাসদাসী মুশরিক নরনারী থেকে উত্তম যদিও তারা তোমাদের মুগ্ধ করে।” এইটুকু মাত্র লিখলেই হত। কিন্তু শুধু পুরুষদেরকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আয়াতটিকে লম্বা করা হয়েছে।

সূরা নং ২ আল বাকারা আয়াত নং ২২৩: “তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের ফসল ক্ষেত্র। সুতরাং তোমারা তোমাদের ফসল ক্ষেত্রে গমন কর, যেভাব চাও। আর তোমরা নিজদের কল্যাণে উত্তম কাজ পাঠাও। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় তোমরা তার সাথে সাক্ষাৎ করবে। আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও।”

উপরের আয়াতটি বহুল আলোচিত। স্ত্রীদের শস্য ক্ষেত্র বলা হয়েছে। মানে পুরুষরা তার লাঙ্গল দিয়ে.যে ভাবে খুশি সে ভাবেই চাষ করতে পারবে আর ইচ্ছে মত ফসল ফলাবে। এখানে সেই বিষয় উহ্য থাকুক। এখানেও আল্লাহর পুরুষপ্রীতি প্রকাশ পেয়েছে। আর নারীরা বরাবরের মতই দ্রব্য, সম্পদ, বাচ্চাদানী হিসেবে ফুটে উঠেছে।

সূরা নং ২ আল বাকারা (বকনা বাছুর) আয়াত নং ২৩৬: “তোমাদের কোন অপরাধ নেই যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও এমন অবস্থায় যে, তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করনি কিংবা তাদের জন্য কোন মোহর নির্ধারণ করনি। আর উত্তমভাবে তাদেরকে ভোগ উপকরণ দিও, ধনীর উপর তার সাধ্যানুসারে এবং সংকটাপন্নের উপর তার সাধ্যানুসারে। সুকর্মশীলদের উপর এটা আবশ্যক।”

এখানেও তোমাদের কোন অপরাধ নেই যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, এমন অবস্থায় যে, তোমরা তাদেরকে স্পর্শ করনি কিংবা মোহর নির্ধারণ করনি। আবার একই রকম পুরুষ তোষণ। কেন আল্লাহ? পুরুষ ছাড়া মনে হয় আপনার ধর্ম টিকতো না। মোহর কি স্ত্রীকে স্পর্শ করার জন্য? তবে তো ভালো হত একবার স্ত্রী গমনে কত মোহর তা নির্ধারণ করলে। আর রান্নাবান্না আর বাকী কাজের জন্য দৈনিক খাবার আর কাপড় চোপড়। এরপর কি মনে হতে পারে ধর্ম নারীদের জন্য!

সূরা নং ৫ আল-মায়িদাহ (খাদ্য পরিবেশিত টেবিল) আয়াত নং ৬: “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক তবে ভালো ভাবে পবিত্র হও। আর যদি অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা যদি তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসে অথবা তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস কর অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ কর। আল্লাহ তোমাদের উপর সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না, বরং তিনি চান তোমাদের পবিত্র করতে এবং তার নিয়ামত তোমাদের উপর পূর্ণ করতে, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।”

উপরের আয়াতে সালাতে দণ্ডায়মান হতে হলে পুরুষদের কখন কী কী করতে হবে তার বর্ণনা রয়েছে। এখানে বলা হচ্ছে তোমরা যদি স্ত্রী সহবাস কর অত:পর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর। তার মানে হল নামাজ শুধু পুরুষদের জন্য। আর যদি নারীপুরুষ সবার জন্য তবে আয়াতটিতে স্ত্রীসহবাস না লিখে শুধুমাত্র সহবাস লিখলেই হত। নারীরা বুঝে নিতো নামাজ তাদেরও জন্য। স্ত্রীসহবাস হওয়ায় বুঝা যাচ্ছে নামাজ শুধু পুরুষদের জন্য। নারীর জন্য নয়।

পুরো কোরান শরীফ জুড়ে আরো বহু জায়গায় এভাবেই মহান আল্লাহতালা, হে নবী, নবীকে উদ্দেশ্য করে তুমি, কখনও আপনি, হে মুমিন, হে মুমিনগণ বা তোমাদের বা তোমরা বলে পুরুষদেরই সম্বোধন করে কথা বলেছেন। মাঝে মঝে নিজের প্রশংসা করেছেন, নিজে কী করেছেন, কী করবেন তা বলেছেন। আর আছে বিভিন্ন নবী কাহিনীর বর্ণনা।

কোথাও এমন নেই ‘তোমরা’ শদটি দিয়ে নারীপুরুষ সবাইকে বুঝিয়েছে কিংবা ‘মুমিন’ শব্দটি দিয়ে নারীপুরুষ সবাইকে বুঝিয়েছে। পুরুষদেরকে বলে দিচ্ছেন নারীদের হেন কর, তেন কর। হাতে গোনা কিছু বাদে বা কোথাও কোথাও খুব কম জায়গায় নারীপুরুষ উভয়কে থার্ড পারসনে বলেছেন। কেন আল্লাহ? পুরুষ আপনার পেটের আর নারী আপনার পিঠের। নাকি নারী কুড়িয়ে পাওয়া? নাকি আপনি নারীদের ভয় পান? নাকি লজ্জা পান? নাকি নারীদের আপনার দরকারই নেই। আপনার দরকার পুরুষ আর পুরুষের দরকার নারীর। নাকি আপনি পুরুষ গোত্রীয়? একবার কি বলা যেতো না, হে নারীগণ।

সাধারণ ভদ্রতার কথা, আমরা কি একজন আরেকজনের কাছে লেখা চিঠি পড়ি? কোরানোতো নবী মুহম্মদ ও মুমিনদের কাছে পাঠানো আল্লাহতালার চিঠি। তা কি নারীরদের পড়া উচিৎ? তা হলে কোরান নারীদের জন্য নয়। কোরানের আল্লাহতো নারীদের হতেই পারে না। তাহলে কি দাঁড়ালো? নারীদের ধর্ম নেই। যদি কোন নারী নেহায়েত ধার্মিক হতেই চান তবে পুরুষই হবে আপনার আল্লাহ, কোরান এবং ধর্ম। কারণ পুরুষের কাছ থেকেই আপনাকে ধর্ম এবং আল্লাহর কথা জানতে হবে। সবই নারীর ইচ্ছা। ইচ্ছে হলে ধার্মিক হন, ইচ্ছে হলে নিধার্মিক।

7 comments

Recent Posts

See All

7 commentaires


Ajonta
Ajonta
15 août 2020

সত্য কথা বলতে, নারীদের কোন ধর্মেই ন্যায্য অধিকার দেওয়া হয়নি তারা প্রত্যেক ধর্মেই লাঞ্ছিত এবং অবহেলিত......

J'aime

Asfi Alom
Asfi Alom
15 août 2020

আল্লাহর কাছে আমাদের প্রত্যেকেরই সমান মূল্য । এইসব নিয়মগুলো মানুষের তৈরি ।

J'aime

Sumaiya
Sumaiya
15 août 2020

পোস্ট-টি থেকে অনেক কিছু শেখার এবং জানার আছে

J'aime

Prartho790
Prartho790
15 août 2020

আসলে পুরুষরা সবসময় চায় নারীদের কে দাবিয়ে রাখতে । সেজন্য নারীদেরকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে । আল্লাহর নাম দিয়ে ঘরের ভেতর বন্দী করে রাখতে চায় । আমি মনে করি, ঈশ্বরের বা আল্লাহর কাছে আমরা সকল সৃষ্টি সমান এ ভেদাভেদ গুলো মানুষের তৈরি ।

J'aime

ইসলামনিয়ে তোর এতো চুল্কানি কেনরে ভাই? কি করসে তোরে মুসলিমরা

J'aime
Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
lgbt-bangladesh.png
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

bottom of page