এক ডাক্তার জ্বীনের বাস্তব ঘটনাঃ ২য় পর্ব
অফিসে পৌছানোর পরে আমাকে ব্রাঞ্চ এক্সিকিউটিভ এর সাথে দেখা করিয়ে দেয়া হয়। তিনিই আসলে আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছেন। নিজের থেকে অফিসে যাবার জন্য আমাকে উনি ধন্যবাদ জানান। তারপরে আসেন মূল কথাতে। উনি আমাকে জানান, যে মোবাইল নাম্বার আমি কিছুদিন আগে দিয়েছিলাম, সেটাকে অটো ট্রাকিং মোডে রাখা ছিল। আসলে আমরা গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা ও অভিযোগ নিশ্চিত করতে এটা করে থাকি। আপনাকে হয়তো বলা হয়েছিল যে ঐ নাম্বারের কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তার ঠিক দুইদিন পরেই আমরা এমন কিছু সিগন্যাল পেতে থাকি, যা আমাদের পুরো কোম্পানিকে কাপিঁয়ে দেয়। যদিও পরে নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারগণ বের করেন যে একজন গ্রাহক আছেন এই নাম্বারে। দেখা গেল যে নাম্বারের অস্তিত্ব আছে কিন্তু গ্রাহক কে তার কোনো হদিস আমরা পাচ্ছিনা।
আমি একটু রেগে গিয়েই প্রশ্ন করি, কেমন নেটওয়ার্কিং ও সিস্টেম আপনাদের যে প্রথমে নাম্বারের হদিস পাননা আবার পরে ক্লায়েন্টের হদিস পান না? আমার অমন প্রশ্ন শুনে উনি স্বাভাবিকভাবেই একটু বিব্রত বোধ করেন। উনি একটু চুপ হয়ে যান, কিভাবে আমায় ব্যপারটা বোঝাবেন সেই ধাধাঁয় পড়েন। পরে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার ও নেটওয়ার্কিং ডিপার্টমেন্টের হেডকে ডেকে পাঠান জরূরী। হেড অফিস পাশে থাকাতে উনারা কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির হন। এসে আমাকে বোঝান যে ব্যাপারটা আসলে খুবই অনাকাঙ্খিত। কোনো নাম্বার এক্টিভ হবার সাথে সাথে সেটা আমাদের নেটওয়ার্ক ও সিস্টেমে অটো এন্ট্রি হয়ে যায়। তবে তার তথ্য আমরা আমাদের সার্ভারে না দিলে সেটি কখনোই কাজ করবে না। অটো এক্টিভ হলেও সেটা ম্যানুয়ালি আমরা করে দিচ্ছি। এখন এই যে নাম্বার আপনি আমাদেরকে দিয়েছিলেন, সেই গ্রাহকের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই কিন্তু নেটওয়ার্কে হঠাৎ করে দেখছি একটা ভিন্ন সিগন্যাল তৈরী করে নাম্বারটি প্রায় সময়ই এক্টিভ হচ্ছে। ব্যাপারটা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
উনারা আমাকে অনেক ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন এইটাই যে প্যারানরমাল কিছু একটার অস্তিত্ব উনারা টের পাচ্ছেন। কিন্তু কোনোভাবেই সমাধানে আসতে পারছেন না।
এতক্ষণ উনাদের কথা শোনার পরে আমি জিজ্ঞেস করি, তো আমি কিভাবে আপনাদেরকে সাহায্য করতে পারি?
ব্রাঞ্চ এক্সিকিউটিভ বলেন, আসলে যেহেতু আপনিই নাম্বারটা আমাদের জানিয়েছিলেন, তো আমাদের বিশ্বাস আপনি হয়তো জানেন যে নাম্বারটা কে ব্যবহার করছে? আসলে সেই তথ্য দেয়া বা না দেয়াটা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আমি সোজা একটা উত্তর দিয়ে সেখানে থাকা সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলে আসি। উত্তরটা ছিল সিম্পলি "না"।
বাসায় আসি, আমার মাথা আসলে ঘুরতে থাকে। বুঝি যে ঘুমের অনেক প্রয়োজন। লম্বা ঘুমের। কারণ, একটু আগে অধ্যাপকের সাথে কথা বলা শেষ করে একটা ব্যাপার নিয়ে ভাবা শেষ করতে না করতেই আরেকটা চিন্তা মাথার মধ্যে। আমি আসলে আর এত নিতে পারছিলাম না, এসব ভাবতেই ভাবতেই আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
পরদিন আমি আবার ফোন কোম্পানির ঐ ভদ্রলোকের সাথে দেখা করতে যাই। গিয়ে বলি, আচ্ছা, ব্যাপারটা নিয়ে আপনারা আসলেই খুব ভুগছেন হয়তো। তাইনা? তো একটা কাজ করেন না, সার্ভার ও নেটওয়ার্কিং সিষ্টেম থেকে কেন নাম্বারটা মুছে ফেলছেন না? সব কি আপনারাই কন্ট্রোল করছেন না?
উনি আমাকে বলেন, আসলে সেটাই আমরা পারছিনা। পারলে তো আপনার সাহায্য চাইতাম না তাইনা? শুধু তাইনা, আমরা দেখতে পারছি যে ঐ নাম্বার থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটা নাম্বারে কল যাচ্ছে। সিগন্যাল- এর মাধ্যমে সেটা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কোনভাবেই কল লিষ্টে নাম্বার আসছেনা!
আমি বলি, আচ্ছা, বুঝতে পেরেছি। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমার আসলেই কিছুই করার নেই। শুধু মাথায় এলো যে আপনারা এই কাজটা করতে পারেন, তাই বলে গেলাম, কিন্তু সেটাতেও যেহেতু কাজ হচ্ছেনা, আমি আর কি করতে পারি বলুন।
আমি কলেজে যাই ওদের অফিস থেকে। গিয়েই দেখি ক্লাসের সামনে মাহদী আমার জন্য অপেক্ষা করছে। সেদিন আমার কেন জানি মনে হলো ওর মন খারাপ অনেক। গতকাল থেকে কি হচ্ছে সেগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ওকে আমি জিজ্ঞেস করি, মাহদী তোমার কি মন খারাপ?
মাহদী আমাকে প্রথমে কিছু বলেনা। আমিও জোর করিনা। তবে ক্লাস শেষ হলে ও আমাকে বলে ওর বড় ভাই যিনি আছেন সে খুব অসুস্থ। কিন্তু সেটার বিশদ বর্ণনা দেয়া থেকে সে বিরত থাকে!
আমি বাসায় এসে মাকে বড় মগ ভর্তি চা করে দিতে বললাম, আসলে মাহদীকে নিয়ে আমি অনেক বেশী চিন্তিত। কেনই বা চিন্তিত হবো না বলেন?
হাতের কর গুণে দেখুন,
১। ফোন ও ফোন কোম্পানির এই রহস্য
২। পরিবারের কথা সে বলেনা
৩। সেদিন কফির মগ ঠান্ডা ছিল, আমি কেন জানি নিশ্চিত, ওইটা আমারই কফির মগ ছিল
৪। তার ডান পাশে হৃৎপিন্ড
ওহ! আরেকটা কথা তো বলায় হয়নি! মাঝে একদিন বাসায় মায়ের সাথে রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়িয়ে ফেলেছিলাম। অনেকখানিই পুড়ে গিয়েছিল। পরদিন ও আমার সাথে অনেক পথ হেটেঁছিল হাত ধরে। ওভাবেই হাটঁতে হাটঁতে বাসার সামনে গেলে ও ওর বাসায় চলে যায় আর আমি ঘরে ঢুকি। ঢুকেই পোড়া জায়গাতে ঔষধ লাগাতে যাবো আর দেখি আমার হাতে পোড়ার কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই। এই হাত ধরেই ও এতসময় হেটেঁছিল। এমনকি ও যে হাত ধরেছিল, সেই সময় আমি কোনো ব্যথাও টের পাইনি।
মা চা দিয়ে গেলে আমি ঠান্ডা মস্তিষ্কে সব ভাবতে থাকি শুরু থেকে। এখানে একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন যে আমি ছোটবেলায় খুব বেশী ধার্মিক হলেও ধীরে ধীরে ধর্ম পালনের অভ্যেস দিনে দিনে কমে যেতে থাকে! তবে আমি বিশ্বাসী। আর পরিবারে আমার মা নিয়মিত নামাজ-কালাম পরেন। ভাই-ও বেশ ধার্মিক। তো আমার ভাইকে একদিন দেখেছিলাম একটা বই পড়তে। জ্বীন রিলেটেড। এই প্রায় দেড় বছর পর এসে আমার মাথায় হঠাৎ করে জ্বীনের চিন্তা এলো। নিজেকে প্রশ্ন করছিলাম, আচ্ছা, মাহদী জ্বীন না তো?
চা রেখে ভাইয়ার রুমে গেলাম, ভাইয়া নামাযে ছিলেন, নামায শেষ করে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কিছু বলবো কিনা! আমি বললাম, ভাইয়া তোমাকে একবার দেখেছিলাম তুমি কি একটা বই পড়ছিলে যেন জ্বীন রিলেটেড। ভাইয়া বলে, হ্যাঁ, জ্বীন নিয়ে আমার বেশ কৌতুহল। তুই কি বইটা পড়বি? পড়ে দেখতে পারিস। অনেক তথ্যবহুল।
ভাইয়ার কাছ থেকে বইটা নিয়ে আসি। নিয়ে পড়া শুরু করি, বিভিন্ন বাস্তব ঘটনা, হাদিস ও কোরানের আয়াত দিয়ে জ্বীন সম্পর্কে সব কিছু সুন্দর করে ব্যাখ্যা করা। আমি পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিলো যে মাহদী আমার আশেপাশেই আছে হয়তো। বইটার ২০ পৃষ্ঠায় একটা কথা ছিল, জ্বীন অগ্নি হইতে তৈরী বিধায় তাহাদের তাপকে নিয়ন্ত্রিত করিবার বহুমাত্রিক ক্ষমতা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত।
২২ নং পৃষ্ঠাতে এই লেখক যিনি কিনা একজন আলেম, তিনি বলেছেন, তিনি একবার এক জ্বীনকে ধরেছিলেন। যে কিনা ১৪ বছর বয়সী কিশোরীর ওপর জাদু করে নজর দিয়েছিল। জ্বীনকে তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোদের সাথে আমাদের পার্থক্য কোথায়?
জ্বীন নাকি বলেছিল, অনেক অনেক পার্থক্য তবে জাতিভেদে পার্থক্য নির্দেশিত হয়। আমরা এক এক জাতি এক এক রকম এবং ভিন্ন ভিন্ন ক্ষমতার অধিকারী। যদি আমার জাতির কথা বলি, তবে মূল পার্থক্য এখানে থাকতে পারে যে আমাদের মধ্যে অনেকেরই হৃৎপিন্ড ডানদিকে। সকলের না।
এটা জানার পর থেকে আমি ভয়ে নাকি অজানা আতঙ্কে, ঠিক কিসে জানিনা, কাপঁছিলাম। রাতে আমার অনেক জ্বর এলো। আমি তখন থেকেই বিশ্বাস করা শুরু করেছি যে মাহদী মানুষ না, ও একটা জ্বীন। যেহেতু ওরা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতে রূপ পরিবর্তন করতে পারে, তার মানে হলো মাহদী আসলে মানুষের বেশ ধরে আমাদের সাথে পড়াশুনা করছে। আমি ঠিক মেনে নিতে পারছিলাম না। এই কারণেই হয়তো এই রহস্য ওর মধ্যে। ব্যাপারগুলো আমার কাছে একদিকে দিনের আলোর মতোও পরিষ্কার হচ্ছিলো আবার কেন জানি মানতেও পারছিলাম না।
জ্বরের কারণে দুইদিন আমি কলেজে যেতে পারিনি। আর দুইটা দিন মাহদীও আমার কোনো খোজঁ নেয়নি। সেই কষ্টে আমি যেন আরো বেশি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। একটা কল তো দিতে পারতো? এসব ভাবছি আর তখনই বাসার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। আমার মা দরজা খুলে দেয়। মাহদীর কন্ঠ। ও আসে, এসে আমার পাশে বসে। মাও বসে। ওকে দেখে আমার নিজের হার্টবিটটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে ও জ্বীন সেটা ভেবে না। আসলে আমি তো তখনো সেভাবে নিশ্চিতও না যে ও কি!
আমি আমার মা কে বললাম, মা তুমি যদি একটু আমাদের একাকী কথা বলতে দিতে? মা চলে গেলে আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, একটা বার কি ফোন দেয়া যেত না? আজ দুইদিন পরে এলে খবর নিতে! আমি যখন এইসব প্রশ্ন করছি, ও তখন আমার পাশে বিছানায় থাকা জ্বীন সম্পর্কিত বইটা হাতে নিল। তা দেখে আমি নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগলাম, কেন যে বইটা লুকোলাম না! কিন্তু আমিও কি জানতাম ও এভাবে চলে আসবে? আমি আসলে তখন চুপ করে গেলাম। ওকে দেখলাম, বই এর পাতাগুলো উল্টোচ্ছে। ও নিজেই আমাকে আমার প্রশ্নের জবাব দিল অনেক সময় পরে, বললো, ওর ভাই এখনো অসুস্থ। চিকিৎসা চলছে। সেই কারনে ও কোন প্রকার খোজঁ নিতে পারেনি! আর ওর ফোনে নাকি কাজ করছেনা!
যখন ও বললো যে ওর ফোনে কাজ করছেনা, আমি আবার যেন ভরসা পেলাম যে ও আসলে কোনো জ্বীন না। বইয়ের পাতা উল্টেপাল্টে আমার পাশের টেবিলে ওটা রেখে দিয়ে বললো, এইসব বই কোথায় পাও? জিজ্ঞেস করলাম, কেন কোনো সমস্যা? আমার ভাই এর বই। আমি আসলে জ্বীনদের সম্পর্কে অনেক কৌতুহলী, তাই পড়ছিলাম আরকি!
ও প্রতিউত্তরে বলে, নাহ, আমার আবার কিসের সমস্যা? তবে লেখক গাঁজাখুড়ি মনগড়া কথাবার্তা লিখেছেন। এই বইয়ের ৭০ শতাংশ তথ্য বানোয়াট। ওর চোখের দিকে দৃষ্টি রেখে বলি, কেন এমনটা ভাবছো? তুমি কি জ্বীনদের সম্পর্কে বেশী জানো এই লেখকের চাইতে?
ও শুধু একটা জবাবই দেয়, হয়তোবা! পালটা প্রশ্ন করি, কিভাবে? ও বলে, থাক সেসব কথা। আসলে ছোটবেলা থেকেই জ্বীন-ভূতের অনেক কথা শুনে আসছি তো, এই কারণে বললাম। জিজ্ঞেস করি, তোমার জানাতে তো ভুলও থাকতে পারে? ও বলে, কি জানি হয়তোবা! তবে যা বললাম, তাই সত্যি; এই লেখক জ্বীনদের কে নিয়ে গাঁজাখুরি কথাবার্তা লিখেছে। এই বলতে বলতে ও আমার কপালে দুইবার হাত বুলিয়ে দেয়। আমি ওকে কাল রেষ্টুরেন্টে দেখা করতে বলি। ও বলে, আগে কলেজে আসো, তারপর দেখা যাবে।
এই বলে ও আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে যায়। মা ওকে বিদায় দিয়ে আমার ঘরে এসে আমার কপালে হাত রেখে খুব বেশি শকড হয়ে যান। মায়ের এমন অবস্থা দেখে আমি নিজেও নিজের হাত কপালে রাখি। হায়! হায়! একটু আগে জ্বরে পুড়ে যাওয়া আমি স্বাভাবিক?
পরদিনই আমি জরুরী ভিত্তিতে মাহদীর সাথে দেখা করি।
আমি মানসিকভাবে সবটুকু প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছি ওকে জিজ্ঞেস করবো যে ও আসলে কি? মানুষ নাকি জ্বীন? এই প্রশ্নের সঠিক ও সত্য জবাব যদি আমাকে দেয় তবে আমি সম্পর্ক রাখবো, আর যদি কিছু লুকোনোর চেষ্টা করে, তবে আমি ওকে ভুলে যাওয়ার সবটুকু চেষ্টা করবো।
আমরা ক্লাস শেষে বসি। তবে কলেজের পাশেই কোথাও। কিন্তু কিছুই জিজ্ঞেস করতে পারিনা। ওর চোখের দিকে তাকালে আমি যেন সবকিছু ভুলে যাই। কতখানি মায়ায় পড়লে আর ভালোবেসে ফেললে এমনটা হয়!
ও আমাকে বলে, মিথিলা, আমি জানি তুমি আমাকে কিছু প্রশ্ন করতে চেয়েছিলে। প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে আছে। জিজ্ঞেস করো?
আমি অনেক চেষ্টা করেও পারলাম না, ওটা বাদ দিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করি, আমায় ভালোবাসো? ও আমার প্রশ্ন শুনে হেসে বলে, হ্যাঁ, আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
পরদিন ভাইয়া আমার রুমে আসে। এসে বইটা চায়। জিজ্ঞেস করেন, বইটা পড়ে আমি কি কি বুঝলাম। উনার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বরং পালটা প্রশ্ন করি, আচ্ছা ভাইয়া, তুমি তো বহুদিন যাবত জ্বীন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছো! তুমি কি বের করতে পারবে কে জ্বীন আর কে মানুষ?
আমার ভাই হাসেন। বলে যে, এত বড় ক্ষমতা আমার নেই। তবে আমাদের মসজিদের যিনি আগের ইমাম ছিলেন, উনার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি ও জেনেছি, উনি হয়তো পারেন। তবে উনি এখন অসুস্থ। আর ইমামতি করেন না। আমি ভাইয়াকে বলি, ভাইয়া আমাকে নিয়ে যেতে পারবে?
ভাইয়া বলে, আমি আগে খোঁজ নিয়ে দেখি, তারপর তোকে জানাই। কিন্তু শোন, তোর চোখে মুখে আমি একটা রহস্য দেখছি আজ কয়দিন ধরে। আবার সেদিন মায়ের কাছে শুনলাম, মাহদী আসার পর নাকি তুই হঠাৎ করে সুস্থ হয়ে উঠেছিস। আমি তোকে একটা কথা অনেক অনেক ধরে বলবো বলবো করে বলিনি। আসলে সময় পাচ্ছিলাম না। অফিসের এত চাপ!
বলি, কি নিয়ে ভাইয়া?
ভাইয়া বলে, মাহদী যেদিন প্রথম আমাদের বাড়িতে এলো, সেদিন আমি ওর মধ্যে কিছু জিনিস খেয়াল করেছিলাম যা খুব একটা স্বাভাবিক ছিলনা। ও যখন বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় ওর উঠে দাঁড়ানোটা মানুষের মত মনে হয়না!
Comments