কুরআন এবং মেঘের ওজন
কুরআনে মেঘকে ‘ভারী’ বলা হয়েছে। কুখ্যাত অপবিজ্ঞানী হারুন ইয়াহিয়া কুরআনের এই মেঘকে ‘ভারী’ বলাকে কুরআনের একটি বৈজ্ঞানিক মিরাকল বলে দাবি করেছেন। [1] তার মতে, মেঘ যে ভারী হয় সেই তথ্যটি কুরআনে আসাটা অস্বাভাবিক ব্যাপার।
হারুন ইয়াহিয়া লিখেছেন,
“মেঘের ওজন অত্যাশ্চর্য অনুপাতে পৌঁছাতে পারে। যেমন, একটি পুঁজমেঘ, যা সাধারণত ‘বজ্র মেঘ’ বলে পরিচিত, ৩০০,০০০ টন পর্যন্ত পানি ধারণ করতে পারে। ৩০০,০০০ টন পানির একটি স্তূপ যে আকাশে ভেসে থাকতে পারে সেটা সত্যিই আশ্চর্যজনক। মেঘের ওজনের ওপর লক্ষ্য রেখে কুরআনে বর্ণিত আয়াত সমূহ: 7:57 وَ ہُوَ الَّذِیۡ یُرۡسِلُ الرِّیٰحَ بُشۡرًۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَقَلَّتۡ سَحَابًا ثِقَالًا سُقۡنٰہُ لِبَلَدٍ مَّیِّتٍ فَاَنۡزَلۡنَا بِہِ الۡمَآءَ فَاَخۡرَجۡنَا بِہٖ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ ؕ کَذٰلِکَ نُخۡرِجُ الۡمَوۡتٰی لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۵۷﴾ আর তিনিই তাঁর রহমতের পূর্বে সুসংবাদরূপে বাতাস প্রেরণ করেন। অবশেষে যখন তা ভারি মেঘ ধারণ করে, তখন আমি তাকে চালাই মৃত ভূমিতে, ফলে তার দ্বারা পানি অবতীর্ণ করি। অতঃপর তার মাধ্যমে বের করি প্রত্যেক প্রকারের ফল। এভাবেই আমি মৃতদেরকে বের করি, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। 13:12 ہُوَ الَّذِیۡ یُرِیۡکُمُ الۡبَرۡقَ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا وَّ یُنۡشِیٴُ السَّحَابَ الثِّقَالَ ﴿ۚ۱۲﴾ Bengali – Bayaan Foundation তিনিই ভয় ও আশা সঞ্চার করার জন্য তোমাদেরকে বিজলী দেখান এবং তিনি ভারী মেঘমালা সৃষ্টি করেন। কুরআন প্রকাশিত হওয়ার সময়ে অবশ্যই মেঘের ওজনের ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া অসাধ্য ব্যাপার ছিলো। এই তথ্যটি কুরআনে প্রকাশিত হয়েছিলো, তবে সম্প্রতিই আবিষ্কৃত হয়েছে, যা কুরআনের বাণী যে আল্লাহর বাণী তার আরও একটি প্রমাণ।”
হাহাহা! সত্যিই মিরাকলের নমুনা দেখে না হেসে উপায় নেই! ঠিক কি পান করার ফলে ইসলামিস্টদের মাথায় এসব কথিত মিরাকল চলে আসে তা জানতে আমি খুব আগ্রহী!
মেঘের যে ভর আছে সেটা অনুধাবন করাটা কোনোভাবেই কোনো অসাধ্য ব্যাপার নয়। সপ্তম শতাব্দীর একজন মানুষের জন্য এটি লক্ষ্য করা অসাধ্য ব্যাপার নয় যে, ‘ঝড় ঝটিকাপূর্ণ হয়’ বা ‘কালো মেঘ বৃষ্টি নিয়ে আসে’ বা ‘গাছপালার পানি দরকার হয়’।
মেঘের যে ওজন আছে বা মেঘ যে ভারী হতে পারে, সেটা অনুধাবন করতে পারাটা কোনো অলৌকিক ব্যাপার নয়। এটা অনুধাবন করাটা কঠিন কিছু নয় যে, ‘মেঘ থেকে বৃষ্টি আসে’ এবং ‘বৃষ্টির ওজন আছে’ আর তাই ‘মেঘেরও ওজন আছে’।
হারুন ইয়াহিয়ার কুরআনের বৈজ্ঞানিক মিরাকলের দাবিটি সত্যিই তাকে গর্দভ প্রমাণ করে! তার মতো ইসলামিস্টরা নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে ন্যায্যতা দিতে এবং অমুসলিমদের ব্রেইন ওয়াশ করে তাদের সামনে ইসলামকে প্রকৃত সত্য হিসেবে উপস্থাপন করতে এমন এমন সব দাবি করে বসেন যা তাদেরকেই কৌতুকে পরিণত করে।
Comments