top of page

কালো জাদু পর্বঃ ২য়

আসাদের জীবনে যে কত বড় এক বিপদ গেলো তা আপনাদের গত ঘটনায় বলেছিলাম। সে ঘটনার ঠিক এক বছর পর 2018 সাল। সব ঠিক মতোই চলছিল। আর আমি মামার কাছে মাঝে মাঝে গিয়ে তালিম নিতাম। একদিন আসাদ ফোন দিয়ে বলল বাসায় আব্বু আম্মু খুব ঝগড়া করে, ভালো লাগে না কিছুই । আমি বললাম কি নিয়ে? আসাদ বলল.. গ্রামে আমাদের দাদুর বাড়িতে অনেক সম্পত্তি। আমার আব্বু আর আমার চাচা, তাঁরা 2 জন ই এইসব সম্পত্তির মালিক। কিন্তু আব্বু ছোট থেকেই শহরে থেকে পড়াশোনা করেছে, তারপর জব নিলো, বিয়ে করলো, আমরা 2 ভাই জন্ম গ্রহণ করলাম। কিন্তু গ্রামে যে এত জমি জমা তার প্রতি আব্বুর একদমই আগ্রহ নেই। বছরে একবার বা 2 বার দাদু বাড়ি যাই আমরা। দাদা তো অনেক আগেই মারা গেছেন আর দাদী মারা গেলেন 3 বছর হলো। এখন আম্মু আব্বু কে বলে শহরে বাসা ভাড়া করে আর কত? তোমার ভাগে যে সম্পত্তি আছে তা তুমি তোমার বড় ভাই এর কাছ থেকে বুঝে নাও। কিছু জমি বিক্রি করে শহরে একটু জায়গা কিনে বাড়ি করলে তো আমাদের আর ভাড়া থাকতে হয় না। আর তা ছাড়া ছেলে গুলো বড় হয়েছে, ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে, আর তোমার বড় ভাই তার বউ বাচ্চা নিয়ে তো এত বছর সব একাই ভোগ করছে, কোনদিনও একটু ক্ষেতের চাল বা অন্য কিছু আমাদের দেয় না। তখন আব্বু রেগে গিয়ে বলে...... আমার মা কোন জমি ভাগ করে দিয়ে যায় নি। আর আমার ভাই ভোগ করলে করুক তাতে তোমার কি? তখন আম্মু চিললা চিললি শুরু করে দেয় শেষে আব্বু বলে ঠিক আছে এই বার বাড়িতে গিয়ে বড় ভাই কে বলবো আমার ভাগের সম্পত্তি আমায় যাতে বুঝিয়ে দেয়। আমি আসাদ কে বললাম তাহলে তো ঝামেলা শেষ ই হয়ে গেল, খালু তো মেনেই নিয়েছেন। তখন আসাদ বললো সেটা হলে তো কথাই ছিল না, কিন্তু আব্বু বাড়িতে গেলে একদম পাল্টে যায়।চাচা আর চাচী যা বলে তাই শুনে। সম্পত্তির নাম ও মুখে নেয় না। আম্মু যদি তখন বলতে আসে যে তুমি সম্পত্তি ভাগ এর কথা বল....। তখন আব্বু খুব রেগে যায়, এমন কি সবার সামনে আম্মু কে অপমান করে, আরো অনেক কিছু। আর আমার চাচির খুব প্রশংসা করে আব্বু। কিন্তু যখন বাসায় চলে আসে তখন আব্বু বলে বাড়িতে গেলে আমার মাথা টা কেমন জানি হয়ে যায়। কিছুই বুঝতে পারি না তখন। মনে হয় আমি নিজের ইচ্ছায় চলছি না, আমাকে কেউ নিয়ন্ত্রন করছে। আমি আসাদ এর কথা গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। এমন সময়ে আসাদ বলল আম্মু কথা বলবে তোমার সাথে, আমি বললাম দাও ফোন টা খালা কে। খালা ফোন ধরে বললেন সব শুনেছ মাসুদ? আমি বললাম জি...। খালা বললেন আমি এখন কি করব বাবা? তোমার খালু যদি না বুঝে তাহলে সব সম্পত্তি ওরা ই ভোগ করবে। আমি বললাম খালা.... আমার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে যে খালু গ্রামে গেলে চেঞ্জ হয়ে যায় কেন? খালা বললেন সেটাই তো আমারো সন্দেহ। আমি বললাম আপনি খালু এবং খালুর বাবা মায়ের নাম এসএমএস করে দেন আমি মামার সাথে এই বিষয়ে কথা বলব যে কেন এমন হচ্ছে.....। ফোন রেখে চিন্তা করছিলাম রুমে বসে তখন আমার আম্মা এসে বলল কার সাথে কথা বললি? আমি বললাম ছোট খালার সাথে। আর আম্মা কে সব কথা খুলে বললাম। তখন আম্মা বলল আমাকেও তোর খালা সব বলেছে দেখ তোর হুজুর মামার সাথে কথা বলে কোন ঝামেলা আছে কিনা? এর মধ্যে খালা এসএমএস করে নাম দিয়ে দিলেন। আমি এশার নামাজের পর মামার বাসায় গেলাম তখন তিনি উনার খানকায় (এবাদতের বিশেষ রুম) ছিলেন। আমি অপেক্ষা করছিলাম। তখন পাশের রুমে পর্দার আড়াল থেকে মামী সালাম দিয়ে বললেন মাসুদ কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি এই সময়ে তুমি? আমি বললাম ঝামেলা কিনা বুঝতে পারছি না তবে একটু পরামর্শ করতে এসেছি মামার সাথে। তখন মামী বললেন দেখ মাসুদ আমাদের পর পর 7 টা সন্তান মারা গেছে জন্মের 1 মাসের মধ্যেই। আর এই সব হয়েছে এই কারণে যে, তোমার মামা সারা জীবন ততবির করে মানুষের উপকার করেছেন, কারো কাছ থেকে জীবনেও একটা টাকা নেন নি। কিন্তু এর পরিণামে উনার নিজের আওলাদ টিকছে না। কারণ যারা ততবির করে তাদের পরিবারে খুব খারাপ প্রভাব ঘটে। তাই তোমার মামা কে আমি অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছি ততবির ছেড়ে দিতে। তিনি আমায় কথা দিয়েছেন আর কোনদিন ততবির করবেন না । আর তাই এক বছর আগে তোমার খালাতো ভাইকে যে খারাপ রক্ত খাইয়ে দিয়েছিল এক খারাপ মেয়ে আর জীনের অত্যাচার এর সমাধান এর সব কাজ তোমাকে দিয়েই উনি করিয়েছিলেন। আমি এখন গর্ভবতী, আগামী এক মাস এর মধ্যে আমার বাবু হবে ইনশাল্লাহ...। আমি চাই না নতুন করে কোন বিপদ হোক। তোমার মামার উস্তাদ ই বলেছেন ততবির বন্ধ রাখলে আমাদের বাচ্চাটা আল্লাহ হয়তো বাঁচিয়ে দিবেন। তোমার মামার মন অনেক নরম, মানুষের বিপদে তিনি ঠিক থাকতে পারেন না, তাই উনাকে নিয়ে আমার খুবই ভয়।

মামির সব কথা আমি মাথা নিচু করে শুনছিলাম। পরে আমি বললাম... আমি বুঝতে পেরেছি মামী আপনি কি বুঝাতে চাইছেন আমায়। আমি মামা কে এমন কোন কাজে জড়াবো না যাতে আপনাদের ক্ষতি হয়। মামী বললেন আমি যে তোমায় এত কিছু বললাম তুমি তোমার মামা কে বলবে না। তোমার মামা আসতেছেন আমি গেলাম। মামী চলে গেলেন। মামা আসলেন আমায় দেখে অবাক হয়ে বললেন কি ব্যাপার মাসুদ, এই সময়ে তুমি? আমি মামা কে আসাদ এর সব ঘটনা খুলে বললাম। তখন মামা বললেন দুনিয়ায় মানুষ কত রকম ঝামেলায় যে আছে তা আল্লাহ ই ভালো জানেন । তুমি তোমার খালু আর তার বাবা মায়ের নাম দিও। আমি বললাম আমি নিয়ে এসেছি নাম উনাদের। মামার হাতে দিলাম। মামা বললেন আমি আজ রাতে আমল করে দেখব যে কি হয়েছে। তুমি ফজরের পর দেখা করবে. । আমি মামার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। রাতে যখন ঘুমাতে গেলাম তখন মামীর কথা গুলো বার বার মনে পড়ছিল।

ফজরের পর মামার বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি মামা চেয়ারে বসে লাল চা খাচ্ছেন। আমি মামা কে সালাম দিয়ে উনার পাশে বসলাম। তখন মামা পিছনে ফিরে বললেন কাউকে... আমির হামজা.... আরেক কাপ চা দিয়ে যাও। একটু পরে দেখলাম বেশ লম্বা গায়ের গঠন মুখে কুচকুচে কালো দাড়ি, মায়াবী চেহারা আর সাদা জুববা, সাদা পাগড়ি পরিহিত অসম্ভব সুদর্শন এক যুবক একটা ট্রে তে চা আর এনার্জি বিস্কুট নিয়ে আসলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম যে পুরুষ মানুষ এত সুন্দর হয় কি করে। উনি সালাম দিয়ে মাথা নিচু করে আমার সামনে চা বিস্কুট রেখে আবার চলে গেলেন। আমি মামা কে বললাম উনি কে? আগে কখনো দেখিনি এই খানে। মামা মৃদু হেসে বললেন উনার নাম আমির হামজা । সে একজন জীন, আমার খুব কাছের এক ছাত্র। আমি তো হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম মামার দিকে। বললাম আগে বলতেন একটু কথা বলতাম, এখন একটু ডাকেন তাকে কথা বলি। মামা বললেন আর আসবে না যেহেতু তুমি তার পরিচয় পেয়ে গেছ। আমি বললাম উনার বাড়ি কোথায়? মামা বললেন আফগানিস্তান...। আমার কাছেই আলেম হয়েছে, আর খেদমত করে আমার। মামা বললেন এখন আসল কথা শুন... আসাদের চাচী খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ।

আসাদ এর আব্বা যাতে সম্পত্তি ভাগ করতে না পারে, সে জন্য বাড়ির সামনে এক পুকুরের পানিতে গত 14 বছর যাবত এক কুফুরি টাবিজ ফেলে রেখেছে। যার মেয়াদ এক বছর থাকে। তাই প্রতি বছর একটা করে তাবিজ ওই পুকুরে ফেলে আসাদ এর চাচী।আর তাই আসাদ এর আব্বা বাড়িতে গেলে অন্য রকম হয়ে যায়। আমি অবাক হয়ে বললাম জয় শ্রী রাম... এখন এটা কি করে নষ্ট করা যায় মামা? মামা বললেন আমায় আজকের দিন সময় দাও, আমি কিতাব দেখে আগামী কাল জানাবো, তবে এটা বেশ কঠিন কাজ হবে মনে হচ্ছে

Comments


Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
lgbt-bangladesh.png
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

bottom of page