গীতা মাধুর্য ৩য় পর্ব ( কুরক্ষেত্রকে কেন ধর্মক্ষেত্র বলা হয় )
- Just Another Bangladeshi
- Feb 21, 2016
- 2 min read
বিভিন্ন কারনে কুরুক্ষেত্রকে ধর্মক্ষেত্র বলা হয়। শাস্ত্রে আছে হস্তিনাপুরে বংশে রাজা শান্তুনুর আগে ভারত রাজা ছিল তার বংশধরের ছিল কুরু নামক এক রাজা। সেই রাজার ইচ্ছা ছিল এই ক্ষেত্রকে তিনি ধর্ম ক্ষেত্র বানাবেন। তাই তিনি এই ক্ষেত্রকে কর্ষন করেছিল। তিনি এখানে এমন বীজ রোপন করতে চেয়েছিলেন যাতে এই ক্ষেত্র ধর্মক্ষেত্র হয়। তাই তিনি এখানে বিষ্ণুকে সন্তুষ্টি বিধানের জন্য এক বিশাল যজ্ঞের ব্যবস্থা করেছিলেন।

সে যজ্ঞে ভগবান বিষ্ণু আবির্ভাব হলে তিনি কুরুকে তার এক পা উৎসর্গ করতে বললেন। সাথে সাথে কুরু তার বংশ এবং প্রজাদের কথা চিন্তা করে তার ডান পা কেটে দিয়ে দিলেন কিন্তু বিষ্ণু বললেন আমি সন্তুষ্ট নই তোমার আরেক পা আছে সেটাও কেটে দিতে হবে।
তখন রাজা কুরু সেটাও দিলেন। তারপরেও ভগবান বিষ্ণু সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। তিনি কুরু রাজার দুই হাত চাইলেন। তাও দিলেন রাজা, এরপর ভগবান বিষ্ণু বললেন না এবার তোমার মস্তক আমাকে দিয়ে দাও। যখন কুরু রাজার মস্তক কাটতে যাবে তখন ভগবান বিষ্ণু বললেন আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট আসলে আমি তোমাকে পরীক্ষা নিচ্ছিলাম। তোমার কোন কিছু উৎসর্গ করতে হবে না। আমি এই বর দিচ্ছি আজ থেকে এই স্থানটি ধর্মক্ষেত্র নামে পরিচিত লাভ হবে। এখানে যারা ধর্ম করবে তারা সরাসরি উচ্চলোকে অবস্থান করবে। এই স্থানে আসলে সবার ধার্মিকভাব উদয় হবে। আর এই স্থানে যারা দেহ ত্যাগ করবে তারা সরাসরি উচ্চলোকে অবস্থান করবেন।
বলদেব বিদ্যাভূষণ জাবাল উপনিষদে বলেছেন, এখানে সবসময় দেবতাদের বসবাস হয়। এখানে যাদের জন্ম হয় তার ব্রহ্ম সাক্ষাৎকার হবে।
দিগবিজয়ী কেশব কাশ্মীরি বলেছেন, কুরুক্ষেত্রে কারো মৃত্যু হলে বিলাপ করা উচিত নয়। বিলাপ করলে পাপ হবে কারন এখানে কারো যদি মৃত্যু হয় তাহলে নিশ্চিত সদগতি প্রাপ্ত হবে। এখানে যার মৃত্যু হবে তিনি উচ্চলোকে গমন করবেন।
ভাগবতে দেবতাদের মা অদিতি বলেছেন, কৃষ্ণের আরেক নাম হচ্ছে তীর্থপাদ অর্থাৎ যার চরণে সমস্ত তীর্থ অবস্থিত। তাই এই ক্ষেত্রেকে ধর্মক্ষেত্র বলা হয়।
ভগবানের আরেক নাম হলো হতারীগতিদায়ক অর্থাৎ কেউ যদি কৃষ্ণের সামনে মারা যায় বা কৃষ্ণকে দেখতে দেখতে মারা যায় তাহলে তার গতি হচ্ছে উচ্চলোকে। তাই কুরুক্ষেত্রকে ধর্মক্ষেত্র বলা হয়।
ধর্মক্ষেত্র মানে এটা ধর্ম ক্ষেত যেমন আপেল ক্ষেতে আপেল হয়। ধান ক্ষেতে ধান তেমনি কুরুক্ষেত্রকে ধর্ম ক্ষেত বলা হয় কারন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এই ধর্মকে সংস্থাপন করে।
ধান গাছে যেমন আগাছা থাকে দেখতে ঠিক ধান গাছের মতো। দক্ষ কৃষক সেই আগাছাগুলো সমূলত ভাবে উপড়ে ফেলে। তেমনি দক্ষ কৃষকরূপি কৃষ্ণ সে প্রথমেই আগাছা স্বরূপ কৌরবদের সমূলতভাবে উৎপাটন করেছেন। তাই এই ক্ষেত্রের নাম ধর্মক্ষেত্র।
Comentários