top of page
Writer's pictureJust Another Bangladeshi

প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে থাকা ক্বারীন জ্বিন ও তার কাজ।


কুরআন অনুসারে জ্বিন জাতি মানুষের ন্যয় আল্লাহ্‌ তা'য়ালার এক সৃষ্ট একটি জাতি। পৃথিবীতে মানব আগমনের পূর্ব থেকেই তাদের অস্তিত্ব ছিল। এখনও তাদের অস্তিত্ব রয়েছে। মানুষের চর্মচক্ষে তারা দৃষ্টিগ্রাহ্য নয়। তবে জ্বিন রা মানুষকে দেখতে পায়। তারা বিশেষ কিছু শক্তির অধিকারী। মানুষ যেই জিনিষ সম্পর্কে জানেনা, সেটাকে বেশি ভয় করে, কারণ অজানা জিনিষ দ্বারা ক্ষতির আশংকা থাকে। সেইজন্য অজানা, অন্ধকার জিনিসের ব্যপারে মানুষ ভয় পায়। অনেকে জ্বিন কে ভয় পায়, অথচ একে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা যেমন একটা সৃষ্ট জীব, জিনেরাও আল্লাহর একটা সৃষ্ট জীব। তবে সাপের গায়ে পা দিলে যেমন আমাদের ক্ষতি হতে পারে, ঠিক তেমনি জ্বিন সম্পর্কে না জানলে আমাদের ক্ষতি হতে পারে।

ক্বারীন জ্বিন তাঁর কাজ।

‘ক্বারীন’ – ক্বারিন অর্থ হচ্ছে সংগী, প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান জ্বিন লেগে থাকে, সংগী হিসেবে।যার নাম হচ্ছে ক্বারীন। এই জ্বিন সবসময় মানু‌ষেকে নজরদারি রাখে এবং ব্যক্তির অন্তরে খারাপ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে। কুরআনে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে যে শয়তানের প্ররোচনা আসে মানুষের বাইরে এবং ভেতর থেকেও (সুরা নাস ১-৬)

নাফরমান এবং গোনাহগার মানুষের উপর শয়তানের আংশিক থেকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আছে কারণ আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার নাফরমানীর দ্বারা মানুষ শয়তানের অনুগত এবং তার প্ররোচনায় আক্রান্ত হয়।

কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ত 'আলা এদের কথা উল্লেখ করেছেন সূরা ক্বাফে এবং অন্যান্য সূরাতে।

“মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেইতো তুমি টালবাহানা করতে। এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন। প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী। তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন। তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই। তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে, যে বাধা দিত মঙ্গলজনক কাজে, সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য গ্রহণ করত, তাকে তোমরা কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর। ‘ক্বারীন’ (তার সঙ্গী শয়তান) বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত। আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না, আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম। আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই। (সুরা ক্বাফঃ ১৯-২৯)

এখানে কিয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে আগমনকারী একজন চালক ও একজন সাক্ষীর কথা বলা হয়েছে। সাক্ষী যে ফেরেশতা তাতে কোন সন্দেহ নেই কারণ এই আয়াত থেকেই স্পষ্ট যে এই ফেরেশতা তার কর্মের সাক্ষী হিসেবে লিপিবদ্ধ করা আমলনামা নিয়ে হাজির হবে। আর চালক অর্থে যে কারীন এর কথা বলা হয়েছে তার মন্দ কাজে প্ররোচিত করার ভূমিকাও আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা উল্লেখ করে দিয়েছেন। এই কারীন আর হাদিসে উল্লেখিত প্রত্যেক মানুষের সাথে নিযুক্ত কারীন এক হোক আর না হোক, কারীনের ওয়াসওয়াসা দেয়া বা প্ররোচনা করার ভূমিকাটি স্পষ্ট।

শয়তান তার সাথী হয়, সে হল নিকৃষ্টতর সাথী। ( সুরা আন-নিসাঃ ৩৮)

শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি। (সূরা আরাফ -২৭) যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি [আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা] তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী [কারীন]। (সুরা জুখরুফঃ ৩৬-৩৮)

পক্ষান্তরে মানুষের নিজের ভেতর থেকে আসা প্ররোচনা সম্পর্কে জানা যায় কিছু সহীহ হাদীস থেকে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে প্রত্যেক মানুষের সাথে রয়েছে একটি করে শয়তান জীন (কারীন বা সঙ্গী) যারা কাজ হচ্ছে মানুষের নিম্নস্তরের মৌলিক কামনা-বাসনা গুলো প্ররোচিত করা,

উসমান ইবন আবু শায়বা ও ইসহাক ইবন ইবরাহীম (রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির সাথেই একটি শয়তান [জ্বিন ] নির্ধারিত আছে। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আপনার সাথেও কি? তিনি বললেন, হ্যা, আমার সাথেও। কিন্তু তার মুকাবিলায় আল্লাহ আমাকে সহযোগিতা করেছেন। এখন আমি তার ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ। এখন সে আমাকে ভাল- কাজ ব্যতিরেকে কখনো অন্য কিছুর নির্দেশ দেয় না।

(সহীহ মুসলিম, বই ৩৯, কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ অধ্যায়, হাদিস ৬৭৫৭)

হারুন ইবন সাঈদ আয়লী (রাঃ)……নবী (সাঃ) এর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, কোন এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তার নিকট থেকে বের হলেন । তিনি বলেন, এতে আমার মনে কিছুটা ঈর্ষা জাগল । অতঃপর তিনি এসে আমার অবস্হা দেখে বললেন, হে আয়েশা! তোমার কি হয়েছে? তুমি কি ঈর্ষা পোষণ করছ? উত্তরে আমি বললাম, আমার মত মহিলা আপনার মত স্বামীর প্রতি কে ঈর্ষা করবে না । এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ তোমার শয়তান কি তোমার নিকট এসে উপস্থিত হয়েছে? তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সাথেও কি শয়তান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। অতঃপর আমি বললাম, প্রত্যেক মানুষের সাথেই কি শয়তান রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যা । অতঃপর আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)! আপনার সাথেও কি রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যা, আমার সাথেও । তবে আল্লাহ তা’আলা তার মূকাবিলায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন । এখন তার ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ নিরাপদ ।

(সহীহ মুসলিম, বই ৩৯, কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ অধ্যায়, হাদিস ৬৭৫৯)

কারীনের বিষয়টি আর একটি হাদীস এ এসেছে,

আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহু (সাঃ) বলেন: তোমাদের কেউ যখন নামায পড়ে, সে যেন নিজের সামনে দিয়ে কাউকে অতিক্রম করতে না দেয়। যদি সে বিরত না হয়, তবে (নামাযী) তার (অতিক্রমকারীর) বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে। কেননা তার সাথে শয়তান (কারীন) রয়েছে।

(সহীহ মুসলিম, খন্ড ৪, কিতাবুস স্বলাত অধ্যায়, হাদিস ১০২৫)

কুরআন ও হাদিসের আলোকে এ ব্যাপারে কোনই দ্বিধা নেই যে ইবলিস (শয়তান) একজন জীন । যার বংশধরেরা শয়তান জ্বিনদের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ সুবহানাহু তা 'আলা বলেন :- যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমকে সেজদা কর, তখন সবাই সেজদা করল ইবলীস ব্যতীত। সে ছিল জিনদের একজন। (সুরা আল-কাহফঃ ৫০)

0 comments

Recent Posts

See All

Comentarios


Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
lgbt-bangladesh.png
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

bottom of page