top of page

মানব রূপী জ্বীন ৩য় পর্ব

হঠাৎ করে কালাম কাকাকে দেখে আমরা চোমকে গেলাম। তিনি আমাদেরকে বললেন তোরা এখানে কি করস!

-ঘুরতেসি। -ঘুরতাসোস মানে? এটা কী ঘুরার জায়গা? -ঘুরতে আসছি ঘুরমু না? -তোরা ঘুরতে পারবি না যেখানে ইচ্ছা করে। -তোমার সমস্যা কী? -আমার শ্বশুর বাড়ি আমার ইচ্ছাতেই হইবো।

আমরা আর কথা না বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেলাম। মেজাজটা খুব খিটখিট করছে। কালাম কাকার জন্য। কিন্তু লোকটা একটু পাগল টাইপের তাই কথা না বাড়ানোই ভালো সিয়াম বললো। আমরা হাটতে হাটতে এক জঙ্গলে চলে আসলাম। অনেক দিন পর গুইসাপের দেখা পেলাম। দেখতে বেশ সুন্দর লাগছিলো। সিয়াম কাছে গিয়ে একটা ছবি তুললো। যেতে যেতে অনেক কাছে চলে গেলো। আমি যদিও মানা করছিলাম। গুইসাপটি দৌড় দিলে একটা,গিয়ে ঝোপের আড়ালে হারিয়ে গেলো। সিয়াম আমাকে বললো- সুন্দরবনের বাসিন্দারা একটা রূলস ফলো করে। তাদের সামনে যদি বাঘ চলে আসে তাহলে বাঘের চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পলক পড়া ছাড়া। এতে বাঘের পেটে খুব বেশি খুদা না থাকলে বাঘ আক্রমণ না করেই চলে যায়। আসলে তুই যখন এক কদম আগাবী তখন প্রতিপক্ষও এককদম পেছাতে বাধ্য হবে।

আমরা জঙ্গলের মাঝে চলে এলাম। সবুজ গাছ-পালা আর নিচে নরম সবুজ ঘাস,বৃষ্টির পানিতে ভিজে আছে,পাশ দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি। অদ্ভুত সুন্দর লাগছিলো দেখতে। প্রকৃতিও অসাধারণ সুন্দর একটি জিনিস। মহান স্রস্টা খুব সুন্দর করেই সৃষ্টি করেছেন এই প্রকৃতিকে তার সৃজনশীলতা দিয়ে। তার সৃজনশীলতা যেনো হার মানায় সকল সৃজনশীলতার। প্রকৃতিকে আমার কাছে নারীর মত মনে হয়। কোথাও তুষাঢ় শুভ্রতায় ঘেরা,কোথাও উষ্ণ মরুভূমি,আবার কোথাও সীমাহীন মহাসাগর তো কোথাও সুউচ্চ পর্বত-মালা। ঠিক যেমন একটি নারী তার সম্পর্ক ভেদে বহূরূপী,যখন সে একজন মা তখন তিনি সম্মানের দিক দিয়ে পাহাড়ের মত উচ্চ স্থানে,যে শত বাধাতেও অটল থাকে,তাকে ধাক্কা দিয়েও ফেলে দেয়া যায় না। আবার যখন একজন স্ত্রী তখন সে তুষারের মত শুভ্র,তুলতুলে-শীতল এক রূপী। যখন সে বোন তখন যেনো তার উষ্ণতা দিয়ে মরুভূমিকেও হার মানায়,সবাইকে চিল রাখে। নারী বহূরূপী তার সম্পর্ক ভেদে। তাই তো ইংরেজিতে প্রকৃতিকে মাদার নেচার বলা হয়।

আমরা প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে গেলাম। তবে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। বাসায় ফিরতে হবে যে! বিকেল হয়ে গিয়েছে। যেকোনো সময় অন্ধকার আসবে। তখন ফিরে যাওয়া মুশকিল হবে। তাই ফিরে গেলাম বাসায়। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। রাতে খাবার বেশ সুস্বাদু ছিল। মাছগুলো বেশ মজাই হলো। আমরা পেট ভরে খেয়ে শুয়ে পড়লাম। সবাই আগে আগে ঘুমিয়ে পড়লো। কারণ এখানে রাত জেগে লাভ নেই। একেতো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। তার মধ্যে রাত সাতটায় ঘুটঘুটে অন্ধকার। মোবাইলে নেটওয়ার্কও নেই তাই রাত জেগে কোনো লাভ হবে না। সিয়াম আমাকে জিজ্ঞেস করলো রাতের বেলা ওর সাথে যাবো কিনা! আমি বললাম না এই রাতের অন্ধকারে যাবো না কোথাও একেতো কালোজাদুর সরঞ্জাম পেয়েছি,তার মধ্যে বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার,সাপ বিচ্ছুর ভয়ে উপেক্ষা করা যাবে না। সেই সাথে ডাকাত থাকারও সম্ভাবনা খিণ নয়। তাই আমার কাছে যাওয়াটা ঠিক মনে হলো না। সিয়াম আমাকে বললো- একটা জিনিস বুঝলি ইফতি,এই জঙ্গলের মধ্যে কালোজাদুর উপস্থিতি,আবার আন্টি বললো কালাম কাকার দাদী শ্বাশুরী কালোজাদু করে তার মানে এখানে কিছু একটা রহস্য আছে। আর সব চাইতে বড় ব্যাপার সেদিন রাতে যেই গন্ধ পাচ্ছিলাম সেই গন্ধ আমি আজকে ঐ জায়গাতেও পেয়েছি। আমি আজকে রাতে আবার যাবো ঐ জায়গাতে দেখতে। আমি সিয়ামকে মানা করিনি আর কারণ সিয়ামকে মানা করে লাভ হয় না। ও যাবেই। চারদিক থেকে প্যাচা,শিয়াল আর জোনাকীর শব্দ আসছিলো। একটা গভীর ঘুম দিলাম। রাতে টয়লেটে যাওয়ার জন্য উঠলাম। উঠে দেখি সিয়াম নাই। টয়লেট যাওয়ার পথে দেখলাম কালাম কাকাও নাই। মেজাজটা বিগড়ে গেলো কালাম কাকা যাবে জানলে তো আমিও যেতাম। একবার ডাক দিলেই হতো।

তবে মনে মনে ভয়ও লাগছিলো। নিজের অজান্তেই বললাম সাহস থাকা ভালো কিন্তু দুসাহস নয়। কে জানে কী হচ্ছে সিয়ামের সাথে এই রাতের অন্ধকারে ভয়ও লাগছে কারণ কালাম কাকাতো পাগল সে থাকা আর না থাকা একই কথা। সিয়ামের থেকে জানবো পরের ঘটনাটা।

চলবে

Comments


Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
lgbt-bangladesh.png
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

bottom of page