top of page
Writer's pictureJust Another Bangladeshi

মূর্তিপূজা নিয়ে মুসলমানদের অপপ্রচারের জবাব

মুসলমানরা বলতে চাই যে বেদে মূর্তি পূজা নিষেধ ৷ এ সম্পর্কে তারা যে দাবী উপস্থাপন করে তা এই—



দাবি-১ //সংস্কৃত ভাষায় –“অন্ধতম প্রভিশ্যন্তি য়ে অসম্ভূতি মুপাস্তে” অর্থ- “তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা প্রাকৃতিক বস্তুর পূজা করে ।যেমনঃ আগুন,পানি ,বাতাস। এখানে আরও উল্লেখ আছে তারা আরও অন্ধকারে প্রবেশ করে যারা সম্ভুতির পূজা করে। সম্ভুতি হল মানুষের তৈরী বস্তু যেমন মূর্তি চেয়ার, টেবিল,ইত্যাদি ।এ কথা বলা হয়েছে যজুবেদের ৪০ নম্বর অধ্যায়ের ৯ নম্বর অনুচ্ছেদে”।//

মুসলমানদের এ দাবীর সত্যতা কতটুকু? আসুন বিশ্লেষণ করি—

মহান বেদজ্ঞ ঋষি শ্রীঅরবিন্দ তাঁর ঈশোপনিষদ (যজুর্বেদের ৪০তম অধ্যায়টিই হচ্ছে ঈশোপনিষদ) ভাষ্যে অসম্ভূতি অর্থ করেছেন, Non-Birth এবং সম্ভূতি অর্থ করেছেন- Birth. এই অর্থই প্রকৃত অর্থ ৷ আমরা চলতি কথাতেও বলে থাকি, “তোমার এই কথা অজ্ঞান-সম্ভূত (=অজ্ঞান হতে জন্ম নেওয়া)”৷ অর্থাৎ স্পষ্টতই সম্ভূত অর্থ জন্ম নেওয়া , আর 'সম্ভূতি’ অর্থ জন্ম (Birth) এবং 'অসম্ভূতি’ সম্ভূতির বিপরীত অর্থবোধক (Non-Birth) ৷ এখন দেখি অনুবাদ—


যজুর্বেদ ৪০/৯


অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি যেহ’সম্ভূতিমুপাসতে ৷
ততো ভূয়া ইভ তে তমো য উ সম্ভূত্যাং রতাঃ ৷৷
— “যে কেবল অসম্ভূতির (Non-Birth) অনুসন্ধান করে সে অন্ধকারে প্রবেশ করে ৷ যে কেবল সম্ভূতিতে (Birth) রত সে অধিক অন্ধকারে রয়েছে ৷”
অসম্ভূতি ও সম্ভূতি সম্পর্কে বেদের মূল বক্তব্য কি সেটা জানতে হলে পরবর্তী মন্ত্র দুটি পড়া অতি আবশ্যক:—

যজুর্বেদ ৪০/১০


অন্যদেবাহুঃ সম্ভবাদন্যদাহুরসম্ভাৎ ৷
ইতি শুশ্রুম ধীরাণাং যে নস্তদ্বিচচক্ষিরে ৷৷
— “বলা হয় যে, সম্ভূতির ফল আলাদা এবং তারা বলে, অসম্ভূতির ফল আলাদা ৷ এইরুপে আমরা শুনেছি সেই ব্রহ্মজ্ঞানীদের নিকট হতে যারা আমাদের কাছে ইহা প্রকাশ করেছেন ৷”

যজুর্বেদ ৪০/১১


সম্ভূতিং চ বিনাশঞ্চ যস্তদ্বেদোভয়ং সহ ৷
বিনাশেন মৃত্যুং তীর্ত্বা সম্ভূত্যাহ’মৃতমশ্নুতে ৷৷
— “যে সম্ভূতি ও বিনাশ (dissolution of Birth) উভয়কেই একত্রে সমন্বয় করতে জানে, সেই বিনাশ দ্বারা মৃত্যুর বন্ধন অতিক্রম করে সম্ভূতি দ্বারা অমৃতত্ব উপভোগ করেন ৷”


ব্যাখ্যা : মূল বিষয় এই যে, সম্ভূতি-অসম্ভূতি একে অপরের পরিপূরক ৷ একটিকে অবহেলা করে অন্যটির অনুসন্ধানের ফল অন্ধকার ৷ তাই বলা হয়েছে শুধু অসম্ভূতি অর্থাৎ জন্মাতীত নির্বাণ লাভের অনুসন্ধানও বিপদ, আবার কেবল সম্ভূতি অর্থাৎ সংসারে জন্মে ভোগের অনুসন্ধানও বিপদ ৷ তাহলে সমাধান কি? সমাধান হচ্ছে কেবল সম্ভূতি বা কেবল অসম্ভূতির অনুসন্ধান করলে হবেনা, উভয়কেই জানতে হবে, সমন্বয় করতে হবে ৷ সংসার জন্মের কর্তব্যও পালন করতে হবে, মুক্তিলাভেরও অনুসন্ধান করতে হবে ৷ তবেই মৃত্যুকে অতিক্রম করে অমৃতত্বের উপভোগ হবে ৷


তথাপিও, যদি আমরা মুসলমানদের অজ্ঞান-সম্ভূত অর্থ স্বীকার করি তাহলে যজুর্বেদ ৪০/১১ তে বলা হয় যে, “ সম্ভূতি (অর্থাৎ মূর্তিপূজা) দ্বারা অমৃতত্ব উপভোগ করেন ৷” তাহলে গর্দভ মুসলমানরা কি করে বলে যে বেদে মূর্তিপূজা নিষেধ?


দাবি- ২ ন তস্য প্রতিমা অস্তি (জজুর্বেদ ৩২ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ৩) অর্থাৎ ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই


প্রতিমা শব্দের অর্থ সদৃশ বা অনুরুপ ৷ তাই উক্ত মন্ত্রের প্রকৃত অর্থ “ঈশ্বরের সদৃশ বা অনুরূপ কেহ নাই” ৷ তথাপিও যদি মুসলমানদের বলা অর্থই স্বীকার করি যে ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই, তবুও প্রতীমা পূজা নিষেধ ঘোষিত হয়না ৷ কারণ ঈশ্বরের প্রতিমা না থাক যেকোন বস্তুতে, যেকোন প্রতীকে ঈশ্বরত্ব আরোপ করে ঈশ্বরবুদ্ধিতে উপসনা করা যাবে ৷ শ্রুতিতে আকাশে, সূর্যে, অন্নে, জলে ব্রহ্মদৃষ্টি(=ঈশ্বরদৃষ্টি) স্থাপন করে উপসনা করা নির্দেশিত হয়েছে (ছান্দোগ্য ৩/১৮/১, ৩১৯/১, ৭/৯/২, ৭/১০/২, ৭/১২/২ ইত্যাদি)৷ ব্রহ্মসূত্রেও এই সিদ্ধান্ত স্থাপিত হয়েছে, “ব্রহ্মদৃষ্টিরুৎকর্ষাৎ” (৪৷১৷৫)


— (The symbol) is to be viewed as Brahman, on account of the exaltation (of the symbol thereby).

শালগ্রাম পূজা, দেব বিগ্রহ পূজার ইহাই তাৎপর্য৷


অতএব, বেদ-বেদান্তে কোথাও প্রতিমা পূজার বিরোধীতা নেই, বরং সম্মতি আছে ৷

0 comments

Recent Posts

See All

Comments


Enjoy
Free
E-Books
on
Just Another Bangladeshi
By
Famous Writers, Scientists, and Philosophers 
click here.gif
lgbt-bangladesh.png
click here.gif

Click Here to Get  E-Books

bottom of page