সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ
- Just Another Bangladeshi
- Aug 24, 2014
- 2 min read

আগামীকাল সূর্য গ্রহণ। সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ নিয়ে প্রাচীনকাল থেকেই নানা সম্প্রদায় নানা মত পোষন করত। আর ঐ মত গুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে বই লিখে ধর্মগ্রন্থ নাম দিয়ে চালিয়ে দিত। আর মানুষেরা সেটাকেই সত্য বলে মেনে নিত।
আমাদের ক্ষেত্রেও অনেকটা সেরকমই ঘটেছে, যখন পবিত্র বেদ বাণী অপ্রায়োগিক হয়ে পড়েছিল; মানুষ তখন কুসংস্কারবাদী হয়ে উঠেছিল। এখনও অনেক পৌরাণিক হিন্দু সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে কুসংস্কারবাদী অযৌক্তিক মতবাদ পোষণ করে। তারা বিশ্বাস করে সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ হয় মূলত রাহু নামের এক অসুরের কারণে, যে পূর্ণিমা তিথিতে চাঁদকে এবং অমবস্যা তিথিতে সূর্য কে গিলে ফেলে। কিন্তু তার গলা কাটা থাকায় কিছুক্ষণ পর সেই কাটা গলা দিয়ে সূর্য ও চাঁদ বেরিয়ে আসে।
এবার আসুন দেখে নেই গ্রহণ সম্পর্কে পবিত্র বেদ, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গণিতবিদ ও জ্যোর্তিবিদ আর্যভট্ট কি বলেন:
ঋগবেদ ৫.৪০.৫ যত্ ত্বা সূর্য স্বর্ভানু স্তমসাবিধ্যদাসুরঃ। অক্ষেত্রবিদ্ যথা মুগ্ধো ভুবনান্যদীধয়ুঃ।।
অর্থাৎ, হে সূর্য যাকে তুমি তোমার নিজ আলো উপহার স্বরূপ প্রদান করেছ(চাঁদ), তাঁর দ্বারা যখন তুমি আচ্ছাদিত হয়ে যাও, তখন আকস্মিক অন্ধকারে পৃথিবী ভীত হয়ে যায়।
এখানে স্পষ্টত সূর্য গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর কারণ চন্দ্র, রাহু নয় তাও এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। আর আর যজুর্বেদ ১৮।৪০ নির্দেশ করে যে সূর্য চন্দ্রকে নিজ আলো প্রদান করে।
জ্যোতিষশাস্ত্র গ্রহলাঘব এর চন্দ্রগ্রহণাধিকার এর ৪ নং শ্লোকে বলা হয়েছে, “সূর্য গ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চাঁদ প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়, যার ফলে সূর্য গ্রহণ তৈরী হয়............সূর্য ও চন্দ্রের মাঝখানে যখন পৃথিবী প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায় ঠিক তখনই চন্দ্র গ্রহণ সৃষ্ট হয়........।।”
আর্যভট্টও তাঁর আর্যভট্টীয় বই এর ৪র্থ অধ্যায় গোলাপাদ এর ৩৭ নং সূত্রে উল্লেখ করেন যে সূর্যগ্রহণ এর জন্য চাঁদ এর ছায়া এবং চন্দ্র গ্রহণের জন্য পৃথিবীর ছায়া ক্রিয়াশীল। তিনি ছিলেন কুসংস্কার বিরোধী, আর তাই তিনি তখনকার পৌরাণিকদের রোষানলে পড়েন। আর তাই তাঁর কর্ম তখন গৃহীত হয়নি। কিন্তু সত্যের উন্মোচন শুরু হয়েছে, আর তাই মিথ্যা অবশ্যই বিলুপ্ত হবে।
Comments