সাহিত্যে কাল্পনিক চরিত্র ঈশ্বর,আল্লাহ,গড,
বিষ্ণু,মহেশ্বর,রাম,কৃষ্ণ,নারায়ণ,লক্ষ্মী,সরস্বতী,দুর্গা,কালী,গণেশ,কার্তিক, শীতলা,মনসা,চণ্ডী,ষষ্ঠী,রাধা,জগন্নাথ,আয়াপ্পা(শবরীমালা মন্দিরের দেবতা),শনি,সম্প্রতি করোনাদেবী----এসব কি ঐতিহাসিক চরিত্র?
বেহুলা,লখিন্দর,সাবিত্রী,সতীবান,সীতা,রাবণ,একলব্য,শম্বুক,একশত কৌরব,পঞ্চপান্ডব,কালকেতু,ফুল্লরা---এসব কি ঐতিহাসিক চরিত্র?
বঙ্কিমচন্দ্র,রবীন্দ্রনাথ,শরৎচন্দ্র,তারাশঙ্কর,বিভূতিভূষণ,মানিক,সমরেশ বসু,সুনীল,শীর্ষেন্দু প্রমুখ বহু কবি-সাহিত্যিক-লেখক-ঔপন্যাসিক বহু উপন্যাস-ছোটগল্প লিখেছেন।এই সব উপন্যাসে বহু চরিত্র আছে।সেগুলো কি ঐতিহাসিক চরিত্র? লেখকদের মন থেকেই ওই চরিত্রদের জন্ম।লেখকরা ওই কাল্পনিক চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের চিত্র লিখেছেন।আমরা পাঠক সমাজ এঁদের রচনাবলী পড়ে সমাজের বহু ছবি জানতে পারি।কিন্তু ওই চরিত্রগুলো নিয়ে মাতামাতি করি না।ওই চরিত্রগুলো ঐতিহাসিক বলে দাবিও করি না।ওই চরিত্রগুলোর উপর দেবত্ব আরোপ করি না।লেখকরাও দেবত্ব আরোপ করেন নি।
ঘটনা হলো,যুগের মানসিকতা বিচার করে রচিত হয় সাহিত্য।প্রাচীনকালের সাহিত্যে কাল্পনিক চরিত্রগুলোর মধ্যে দেবত্ব আরোপ করেছেন স্বয়ং লেখকরা।কারণ,সেই সময় পাঠক সমাজ এটা পছন্দ করতো।লেখকরা মনে করতেন,চরিত্রগুলোর মধ্যে দেবত্ব আরোপ করলে পাঠকরা সন্তুষ্ট হবে ও বাজারে বই বিক্রি হবে।অর্থাৎ,লেখকের একটা নজর থাকে পাঠকের দিকে,পাঠকের চাহিদার দিকে।বর্তমান যুগের সাহিত্যে দেবত্ব আরোপ করলে পাঠক তা মেনে নেবে না।
আমরা যদি যুক্তি,ইতিহাস ও বাস্তব দৃষ্টি দিয়ে প্রাচীন যুগ থেকে এ পর্যন্ত সাহিত্যগুলো পড়ি তাহলে খুব ভালো হয়।আর কোনো সমস্যাই থাকে না।সাহিত্যে বর্ণিত ঘটনাবলী হলো সমাজ চিত্র।সেইগুলো আমরা গ্রহণ করতে পারি।কিন্তু চরিত্রগুলোকে দেবতার আসনে বসিয়ে নিজেদের মনকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত করতে পারি না।
ব্রাহ্মণরা কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে দেবতা বানিয়ে টাকা রোজগার করছে।অ-ব্রাহ্মণরা তা না বিচার করে ব্রাহ্মণের শিকার হয়ে পড়েছে।
Comments